ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের আগে শি ও মোদিসহ অন্যান্য মিত্রদের সঙ্গে পুতিনের ফোনালাপ

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জানাতে চীন, ভারত এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের তিনটি দেশের নেতাদের সঙ্গে শুক্রবার ফোনালাপ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এর আগে বুধবার মস্কোতে পুতিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এরপর ক্রেমলিন জানায়, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই পুতিন ও ট্রাম্পের বৈঠক হতে পারে।
তারপর নিজের ট্রুথ সোশ্যাল সামাজিকযোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প জানা, আগামী ১৫ আগস্ট আলাস্কায় এ বৈঠক হবে। ক্রেমলিনের মুখপাত্রও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাড়ে তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধের অবসানের জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। রাশিয়াকে শান্তিচুক্তিতে রাজি হওয়ার জন্য তিনি শুক্রবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। রাজি না হলে মস্কো ও রাশিয়ার রপ্তানিপণ্য কেনে এমন দেশগুলোর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দেন। চীন ও ভারত রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা।
চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে, দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ফোনালাপে পুতিনকে বলেছেন, ইউক্রেন সংকটের রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছানোর লক্ষ্যে রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা ও সম্পর্কের উন্নতিতে বেইজিং আনন্দিত।
পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার বিরোধে চীন মস্কোর অন্যতম প্রধান সমর্থক। একইসঙ্গে রাশিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অবসানের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আগামী সেপ্টেম্বরে চীন সফরের কথা রয়েছে পুতিনের।
ক্রেমলিন বলেছে, পুতিন উইটকফের সঙ্গে তার আলোচনার বিষয়টি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও আলোচনা করেছেন। রাশিয়ার তেল কেনার জন্য ট্রাম্প এ সপ্তাহেই ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করেছেন।
সামাজিক মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মোদি বলেন, 'আমার বন্ধু প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে খুব ভালো এবং বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ইউক্রেনের বিষয়ে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানানোর জন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছি।'
বৃহস্পতিবার পুতিন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার সঙ্গে কথা বলেন। 'যুদ্ধের অবসান ঘটাবে এবং রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখবে, এমন শান্তি উদ্যোগের প্রতি' দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন রামাফোসা।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান বৃহস্পতিবার মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
রাশিয়া, চীন, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও সংযুক্ত আরব আমিরাত—সবাই ব্রিকস জোটের সদস্য। মস্কো এই জোটকে মার্কিন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্যের বিরুদ্ধে পাল্টা ভারসাম্য হিসেবে দেখে।
শুক্রবার পুতিন তার মিত্র বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো এবং কাজাখস্তান ও উজবেকিস্তানের নেতাদের সঙ্গেও ফোনালাপে উইটকফের সফরের ফলাফল নিয়ে আলোচনা করেন।