দক্ষিণ ইউক্রেন দখলে অভিযান জোরদারের নির্দেশ পুতিনের
দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া অঞ্চল পুরোপুরি দখলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সোমবার তিনি সেনাবাহিনীকে এই অভিযান চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এর আগে এক রুশ কমান্ডার জানান, মস্কোর বাহিনী অঞ্চলটির সবচেয়ে বড় শহর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার (৯.৩ মাইল) দূরে অবস্থান করছে।
ইউক্রেনে শান্তি চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার ঠিক পরদিনই পুতিন এই মন্তব্য করলেন। ক্রেমলিনে শীর্ষ সামরিক কমান্ডার এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলোসভের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি কথা বলছিলেন। বৈঠকটি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়।
রাশিয়ার নিপার মিলিটারি গ্রুপিংয়ের কমান্ডার কর্নেল-জেনারেল মিখাইল তেপলিনস্কি পুতিনকে জানান, রুশ বাহিনী জাপোরিঝিয়া শহরের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। যুদ্ধের আগে এই শহরে সাত লাখেরও বেশি মানুষ বসবাস করত।
জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের প্রায় ৭৫ শতাংশ এলাকা বর্তমানে মস্কোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ২০২২ সালে পুতিন ইউক্রেনের যে চারটি প্রদেশকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে দাবি করেছিলেন, এটি তার একটি। তবে কিয়েভ ও পশ্চিমা অনেক দেশ এই পদক্ষেপকে 'অবৈধ ভূমি দখল' হিসেবে নিন্দা জানিয়ে আসছে।
তেপলিনস্কি পুতিনকে বলেন, 'সামনের সারির (রুশ) ইউনিটগুলো জাপোরিঝিয়া শহরের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।'
এর জবাবে পুতিন বলেন, 'আমরা জানি এবং বুঝি যে আপনাদের ঠিক বিপরীতে থাকা শত্রু বহু বছর ধরে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রস্তুত করেছে। আমরা জানি সেখানকার পরিস্থিতি কতটা কঠিন। তবুও আপনারা আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সফলভাবে পালন করছেন।'
ক্রেমলিন প্রধান তেপলিনস্কিকে জানিয়ে দেন যে তিনি এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত দেখতে চান।
পুতিন বলেন, 'অদূর ভবিষ্যতে জাপোরিঝিয়াকে মুক্ত করতে ইস্ট গ্রুপিংয়ের সঙ্গে মিলে এই অভিযান চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।'
এর আগে রাশিয়ার জেনারেল স্টাফের প্রধান জেনারেল ভ্যালেরি গেরাসিমভ পুতিনকে জানিয়েছিলেন, মস্কোর বাহিনী প্রায় পুরো ফ্রন্টলাইন বা সম্মুখসারিতে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে কিয়েভের বাহিনী এখন প্রতিরক্ষায় মনোযোগী এবং পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করছে।
গেরাসিমভ জানান, ২০২৫ সালে রুশ বাহিনী ইউক্রেনের ৬ হাজার ৬৪০ বর্গকিলোমিটার (২ হাজার ৫৬৩ বর্গমাইল) এলাকা দখল করেছে। এর মধ্যে ৩৩৪টি গ্রাম রয়েছে। ডিসেম্বরে তাদের অগ্রগতির গতি ছিল এ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
তবে রয়টার্স যুদ্ধক্ষেত্রের এই প্রতিবেদনগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।
