ইসরায়েলে সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি স্থগিত করল জার্মানি

গাজায় ব্যবহার করা হতে পারে, এমন সব ধরনের সামরিক সরঞ্জাম ইসরায়েলে রপ্তানি স্থগিত করেছে জার্মানি। ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন দেওয়ার পর আজ শুক্রবার এ ঘোষণা দেন জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মাৎস।
দেশে-বিদেশে তীব্র সমালোচনা ও নিন্দা সত্ত্বেও গতকাল বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানান, তাদের সেনারা গাজা উপত্যকার পূর্ণ সামরিক নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছে।
মাৎস বলেন, 'জার্মান সরকার পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় ব্যবহার হতে পারে, এমন কোনো সামরিক সরঞ্জাম ইসরায়েলে রপ্তানির অনুমতি দেবে না।'
মাৎস ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার ও হামাসের হাত থেকে বন্দিদের মুক্তির দাবিকে সমর্থন জানালেও গাজায় বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি আর উপেক্ষা করা সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুন: গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনায় অনুমোদন দিল ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা
গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা অনুযায়ী ইসরায়েলের আরেকটি বড় স্থল অভিযানের সময়সূচি এখনো নির্ধারিত হয়নি। তবে এ ধরনের অভিযানে মানবিক বিপর্যয় আরও তীব্র হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার পাশাপাশি তীব্র খাদ্যসংকটে ভুগছেন গাজার বাসিন্দারা। অনাহারে-অর্ধাহারে দিনের পর দিন কাটছে তাদের। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২২ মাস ধরে চলা যুদ্ধে অপুষ্টিতে ভুগে অন্তত ১৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৯৬ জনই শিশু। জাতিসংঘ সমর্থিত একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দুর্ভিক্ষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
গাজায় ত্রাণ সহায়তা প্রবেশে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করেছে ইসরায়েল। খুব সীমিত পরিমাণে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে জাতিসংঘের ত্রাণ। মাৎস গাজায় ত্রাণ সহায়তা প্রবেশে এসব বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন।
জার্মান পার্লামেন্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত দেশটি ইসরায়েলের কাছে ৪৮৫ মিলিয়ন ইউরো (৫৬৪ মিলিয়ন ডলার) মূল্যের অস্ত্র রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় সেখানে ৫৯ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে ইসরায়েলকে 'এখনই যুদ্ধ থামানোর' আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। এসব দেশের মতে, গাজায় 'মানুষের দুর্ভোগ এক নতুন গভীরতায় পৌঁছেছে'।