জার্মানিতে যাত্রা শুরু করল বিশ্বের প্রথম হাইব্রিড সৌরচালিত কার্গো জাহাজ ‘ব্লু মার্লিন’

জার্মানিতে চালু হয়েছে বিশ্বের প্রথম হাইব্রিড সৌরচালিত কার্গো জাহাজ 'ব্লু মার্লিন'। পরিবেশবান্ধব নৌপরিবহনে এটিকে একটি অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
'ব্লু মার্লিন' জাহাজটির অত্যাধুনিক সৌর প্রযুক্তির সাহায্যে শুধু জাহাজের অভ্যন্তরীণ সিস্টেমই নয়, মূল প্রপালশন বা চালিকাশক্তিও পরিচালনা করে। জাহাজটি সৌর প্যানেল ও ডিজেল-ইলেকট্রিক সিস্টেমের সমন্বয়ে তৈরি ।
'ব্লু মার্লিন' জাহাজটিতে বসানো হয়েছে ১৯২টি সৌর প্যানেল, যা অনুকূল আবহাওয়ায় সর্বোচ্চ ৩৫ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। এই শক্তি দিয়ে একসঙ্গে ১,৪০০-এর বেশি স্মার্টফোন চার্জ দেওয়া সম্ভব।
নেদারল্যান্ডসভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়াটল্যাব জাহাজটির সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থা ডিজাইন করেছে, যা সরাসরি প্রপালশন সিস্টেমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। আগে যেখানে সৌরশক্তি কেবল নেভিগেশন বা অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত হতো, ব্লু মার্লিন সেখানে মূলতভাবে চলাচলের জন্য সৌরশক্তি ব্যবহার করছে।
অনুকূল পরিস্থিতিতে, বিশেষ করে হালকা বোঝা নিয়ে নিম্নস্রোতে চলার সময়, জাহাজটি পুরোপুরি সৌরশক্তিতে চলতে সক্ষম।
জাহাজটিতে সৌরশক্তির পাশাপাশি রয়েছে চারটি ডিজেল জেনারেটর। এই হাইব্রিড ব্যবস্থার ফলে প্রয়োজনে সৌর ও ডিজেল-ইলেকট্রিক শক্তির মধ্যে সহজেই অদলবদল করা যায়, ফলে যেকোনো আবহাওয়ায় নির্বিঘ্নে জাহাজ পরিচালনা সম্ভব হয়।
বিদ্যুৎ বণ্টনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে একটি স্বয়ংক্রিয় এনার্জি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, যা কোথায় কতটুকু শক্তি প্রয়োজন তা নির্ভুলভাবে শনাক্ত করে সরবরাহ করে।
এ ছাড়া জাহাজটি 'পিক শেভিং' নামে একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যার মাধ্যমে শক্তির চাহিদা বেড়ে গেলে জেনারেটর চালু না করে সৌর ও ব্যাটারির সংরক্ষিত শক্তি ব্যবহার করা হয়।
এতে 'সিফার' নামের রিমোট ন্যাভিগেশন প্রযুক্তিও সংযোজন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু রুটে জাহাজটিকে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
জার্মানির খালপথে চলাচলের জন্য জাহাজটি বিশেষভাবে উপযোগী।