যুক্তরাষ্ট্রে চীনের বিরল খনিজের ম্যাগনেট রপ্তানি সাত গুণ বেড়েছে

যুক্তরাষ্ট্রে চীনের রেয়ার আর্থ ম্যাগনেট (দুর্লভ খনিজচুম্বক) রপ্তানি জুন মাসে আগের মাসের তুলনায় সাত গুণেরও বেশি বেড়েছে, যা দুই দেশের চলমান বাণিজ্য দ্বন্দ্বের মধ্যে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এক নাটকীয় পরিবর্তন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
আজ রোববার (২৩ জুন) চীনের কাস্টমস প্রশাসনের প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে চীন রপ্তানি করেছে ৩৫৩ মেট্রিক টন রেয়ার আর্থ ম্যাগনেট—যা মে মাসের তুলনায় ৬৬০ শতাংশ বেশি।
রপ্তানির এই উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্প্রতি হওয়া বাণিজ্য চুক্তি, যার আওতায় বিরল খনিজ এবং তা দিয়ে তৈরি শিল্পে ব্যবহার্য চুম্বক রপ্তানির ক্ষেত্রে নানা জটিলতা নিরসনে সম্মত হয় দুই দেশ।
চুক্তির অংশ হিসেবে মার্কিন চিপ নির্মাতা এনভিডিয়া ঘোষণা দিয়েছে, তারা তাদের এইচ২০ এআই চিপ আবার চীনে বিক্রি শুরু করবে।
চীন বিশ্বের ৯০ শতাংশের বেশি রেয়ার আর্থ ম্যাগনেট সরবরাহ করে, যা বৈদ্যুতিক যান (ইভি) ও উইন্ড টারবাইন থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সরঞ্জাম তৈরিতেও অপরিহার্য। কিন্তু, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক শুল্কারোপের প্রতিক্রিয়ায়— এপ্রিলের শুরুতে চীন এসব বিরল খনিজ পণ্যের ওপর রপ্তানি সীমাবদ্ধতা আরোপ করে।
এর ফলে এপ্রিল ও মে মাসে বিরল খনিজ রপ্তানিতে বড় ধরনের পতন দেখা দেয়। এক্সপোর্ট লাইসেন্স বা রপ্তানির অনুমোদন প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতার কারণে রপ্তানি ব্যাহত হয়। ফলে চীনের বাইরে অন্যান্য দেশের কিছু অটোমোবাইল প্রস্তুতকারক তাদের উৎপাদন আংশিক স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়, এসব প্রতিষ্ঠান দরকারি বিরল খনিজের জোগান পাচ্ছিল না।
চীনের সামগ্রিক রপ্তানির হিসাব বলছে, জুন মাসে বিশ্বব্যাপী ৩,১৮৮ টন রেয়ার আর্থ পার্মানেন্ট ম্যাগনেট রপ্তানি করেছে চীন, যা মে মাসের ১,২৩৮ টনের তুলনায় ১৫৭.৫ শতাংশ বেশি। যদিও ২০২৪ সালের জুনের তুলনায় এই পরিমাণ ৩৮.১ শতাংশ কম।
বিশ্লেষকরা বলছেন, জুনে আরও বেশি সংখ্যক রপ্তানিকারক লাইসেন্স পাওয়ায় জুলাই মাসে রপ্তানি আরও বাড়তে পারে।
২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে চীনের রেয়ার আর্থ ম্যাগনেট রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮.৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২২,৩১৯ টনে।
বিশ্ব রাজনীতির উত্তেজনার মধ্যে এই রপ্তানি বৃদ্ধি যেমন দুই দেশের কৌশলগত অর্থনীতির নতুন বার্তা দেয়—তেমনি বৈশ্বিক প্রযুক্তি ও ইভি শিল্পের জন্য একটি স্বস্তির ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।