কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা; দোহায় একাধিক বিস্ফোরণ
কাতারে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবরের মধ্যেই দোহায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ সোমবার কাতারের রাজধানী দোহায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘাতের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ কাতার সাময়িকভাবে তাদের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা এবং কয়েক ঘণ্টা আগে মার্কিন ও ব্রিটিশ দূতাবাস কাতারে তাদের নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দেওয়ার পর এ বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেল।
একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে এক্সিওসের এক প্রতিবেদক বলেছেন, ইরান কাতারে মার্কিন বিমান ঘাঁটিতে লক্ষ্য করে ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
ইরানের তাসনিম বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, ইসলামি রেভোল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করে বলেছে, তারা কাতারের আমেরিকান আল-উদেইদ ঘাঁটির উদ্দেশে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
তাসনিম বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, কাতার ও ইরাকে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিগুলোর ওপর হামলা চালিয়েছে ইরান।

যুক্তরাজ্যের স্কাই নিউজও জানিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে, ইরাকে মার্কিন বিমান ঘাঁটিতেও লক্ষ্যবস্তু করেছে তেহরান।
এর আগে এক মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, কাতারে অবস্থিত একটি মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান।
কাতারের আল উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে অবস্থানরত মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলার খবর প্রচারের সময় রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমের পর্দায় লেখা ওঠে, 'আমেরিকার আগ্রাসনের প্রতি ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর একটি শক্তিশালী ও সফল জবাব'।

হামলার নিন্দা কাতারের
এদিকে কাতার বলেছে, দোহায় মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ইরানের হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অধিকার কাতারের রয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি বলেছেন, আল উদেইদ ঘাঁটিতে ইরানের হামলার নিন্দা জানায় কাতার।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এই আগ্রাসনের প্রকৃতি এবং মাত্রার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার কাতারের রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কাতারের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সফলভাবে হামলা ও ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রতিহত করেছে। এছাড়াও হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান; অ্যাক্সিওস; আল জাজিরা
বাহরাইনে সাইরেন
এদিকে কাতারের একেবারে কাছের উপসাগরীয় রাষ্ট্র বাহরাইনে বিমান হামলার সাইরেন বেজে উঠেছে বলে নিশ্চিত করেছেন একাধিক বাসিন্দা।
বাহরাইনে যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম নৌবহর মোতায়েন রয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় 'এক্স' প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে নাগরিক ও বাসিন্দাদের 'শান্ত থাকতে' এবং 'নিকটস্থ নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে' অনুরোধ করেছে।
সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না ইরান
ইরানের শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খাতিবজাদে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালায়, তবে তাতে জবাব দেওয়ার পূর্ণ অধিকার তেহরানের রয়েছে।
তেহরান থেকে আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খাতিবজাদে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে ইরান হামলা চালাতে পারে- এ সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
'যুক্তরাষ্ট্রকে কীভাবে, কখন এবং কোন মাত্রায় জবাব দেওয়া হবে, তা ইরান নিজেই ঠিক করবে', বলেন তিনি।
খাতিবজাদে আরও বলেন, ফোরদোর মতো পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের বোমাবর্ষণ আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন এবং একটি 'ভয়াবহ ভুল'।
সূত্র: আল জাজিরা
ট্রাম্প ইরানের বিষয়ে কূটনীতিতে 'এখনও আগ্রহী': হোয়াইট হাউস

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, ইরান পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় বসতে রাজি না হলে দেশটির জনগণের উচিত তাদের সরকারকে হটানো। তবে তিনি সংকট সমাধানে কূটনৈতিক উপায়ে 'এখনো আগ্রহী'।
আজ সোমবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট এ কথা বলেছেন।
লেভিট বলেন, 'যদি ইরান সরকার শান্তিপূর্ণ কূটনৈতিক সমাধানে রাজি না হয়, যার প্রতি প্রেসিডেন্ট এখনো আগ্রহী এবং সে ব্যাপারে কাজ করছেন, তাহলে ইরানের জনগণেরই বা কেন এই সহিংস সরকারকে সরিয়ে দেওয়ার অধিকার থাকবে না? দীর্ঘদিন ধরে তারা দমন-পীড়নের শিকার।'
গতকাল রোববার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিটার হেগসেথ বলেছিলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার লক্ষ্য সে দেশের 'সরকার পরিবর্তন' নয়। পরে অবশ্য ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমমাধ্যমে এক পোস্টে লেখেন, 'সরকার বদল হবে না কেন?'
সূত্র: আল জাজিরা
ইরানে মার্কিন হামলা বিশ্বকে 'অত্যন্ত বিপজ্জনক রেখায়' ঠেলে দিচ্ছে: পুতিন
রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের 'অযৌক্তিক' হামলা বিশ্বকে বড় বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সেইসঙ্গে তিনি ইরানের নাগরিকদের সহায়তা দিতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন।
আজ সোমবার সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাত নিয়ে তিনি েএ কথা বলেন।
পুতিন বলেন, 'আঞ্চলিক শক্তিগুলোকে এই সংঘাতে টেনে আনা হচ্ছে। এ সবকিছুই বিশ্বকে একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক রেখায় নিয়ে আসছে।'
সূত্র: রয়টার্স
মার্কিন হামলার জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার ইরানের

যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা 'সম্পূর্ণ ধ্বংস' হয়েছে- মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ দাবির পর ইরানের কর্মকর্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, তারা মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোতে পাল্টা হামলা চালাতে প্রস্তুত।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর নতুন চিফ অব স্টাফ আবদুলরহিম মুসাভি এক বিবৃতিতে বলেন, 'অপরাধী যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই জানতে হবে—এর অবৈধ ও আগ্রাসী সন্তানকে [ইসরায়েল] শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি ইসলামের যোদ্ধারা এখন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ও সামরিক উপস্থিতির বিরুদ্ধে যেকোনো পদক্ষেপ নিতে স্বাধীন। এ বিষয়ে আমরা একচুলও পিছু হটব না।'
এছাড়াও, কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার সম্ভাবনা এবং পারমাণবিক অস্ত্র প্রসারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চুক্তি এনপিটি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়েও ইরান আলোচনা করছে।
সূত্র:আল জাজিরা
কাতারে অবস্থানরত মার্কিনদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ যুক্তরাষ্ট্রের
কাতারের দোহায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস সে দেশে অবস্থানরত মার্কিনদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। এক ইমেইল বার্তায় দূতাবাসের পক্ষ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।
ইমেইল বার্তায় দূতাবাস জানায়, 'অতিরিক্ত সতর্কতার কারণে' এ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।
উপসাগরীয় এই রাষ্ট্রটিতে আল উদেইদ বিমান ঘাঁটি অবস্থিত। এখানে প্রায় ১০ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে। এই ঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের ফরোয়ার্ড হেডকোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
সূত্র: আল জাজিরা
ইরানের জনগণকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত রাশিয়া: পুতিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইরানকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত তাঁর দেশ। একইসঙ্গে ইরানের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের যৌক্তিকতা ছাড়াই আগ্রাসন চালানো হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বর্তমানে রাশিয়া সফর করছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। সোমবার তিনি পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকের শুরুতেই তাঁকে এসব কথা বলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।
পুতিন বলেন, "আপনি (আব্বাস আরাগচি) আজ মস্কোতে এসেছেন— আমি এতে অত্যন্ত আনন্দিত। এই জটিল পরিস্থিতি নিয়ে একসঙ্গে আলোচনা করার এবং বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের করতে- এটি আমাদের জন্য একটি সুযোগ।"
পুতিন বলেন, "এই অবাস্তব ও অপ্ররোচিত আক্রমণের কোনো ভিত্তি নেই।"
পুতিন আরও উল্লেখ করেন, "আমরা ইরানিদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছি।" তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই বৈঠক "আগামীতে বিদ্যমান পরিস্থিতি উত্তরণে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ উন্মুক্ত করবে।"

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার নিন্দাজ্ঞাপন করায় রাশিয়াকে ধন্যবাদ জানান আরাগচি। তিনি বলেন, ইরানের প্রতিরক্ষা অবৈধ নয়—এটা স্বাভাবিক আত্মরক্ষা। এসময় রাশিয়া ইতিহাস ও আন্তর্জাতিক আইনের সঠিক পক্ষে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আরাগচি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ও প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ানের শুভেচ্ছা পুতিনকে পৌঁছে দেন।
সূত্র: রয়টার্স
বিস্তারিত আসছে…
ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, তেহরানে বড় বিস্ফোরণ
ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার একদিন পর আজ সোমবার স্থানীয় সময় সকালে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। অন্যদিকে ইরানের রাজধানী তেহরানের বিভিন্ন স্থানেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
ইসরায়েলের সাবেক বিচারমন্ত্রী জোসি বেইলিন এ হামলাকে গত ১৩ জুন সংঘাত শুরুর পর ইসরায়েলে ইরানের সবচেয়ে বড় হামলা বলে উল্লেখ করেছেন।
তেলআবিব থেকে আল জাজিরাকে তিনি বলেন, 'হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি, কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ এখনো স্পষ্ট নয়।'
তিনি আরও বলেন, 'এটা (হামলা) দিনে হয়েছে, যা বিরল। সাধারণত এটা রাতে হয়।'
বেইলিনের মতে, ইসরায়েল যদি ইরানের অস্ত্রভাণ্ডারের একটি বড় অংশ ধ্বংস করতেও সক্ষম হয়ে থাকে, তারপরও ইরানের হাতে এখনও পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন রয়েছে, যা দিয়ে তারা ইসরায়েলে হামলা চালাতে পারে।
তিনি যোগ করেন, ইসরায়েলের সেনাবাহিনী সম্ভবত ড্রোনগুলোর একটি বড় অংশ অকার্যকর করতে পেরেছে, কিন্তু তাদের (ইরানের) হাতে প্রতিদিন নিক্ষেপ করার মতো যথেষ্ট (ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র) রয়েছে, এটা নিশ্চিত।
আল জাজিরার খবরে আরও বলা হয়েছে, ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) জানিয়েছে, ইসরায়েলের হাইফা ও তেল আবিবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইরান।
আইআরজিসি বলছে, ইসরায়েলের হাইফা ও তেল আবিব শহরে হামলা শুরু হয়েছে। সামরিক লক্ষ্যবস্তু এবং সামরিক শিল্প-সম্পর্কিত কেন্দ্রগুলোর বিরুদ্ধে নতুন একটি সমন্বিত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা শুরু হয়েছে।
এটি আরও জানিয়েছে, অভিযান চলছে, যেখানে ১০০টিরও বেশি ধরনের যুদ্ধ ও আত্মঘাতী ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের সামরিক ও সামরিক শিল্পক্ষেত্রের লক্ষ্যবস্তুর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাত্রা আরও বাড়বে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে আইআরজিসি।
এদিকে তেহরানে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় রয়েছে। সেখানে টানা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
সূত্র: আল জাজিরা
ইরানে এ পর্যন্ত ৫০০ মানুষ নিহত হয়েছে: রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম
ইরানে গত ১৩ জুন ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত 'প্রায় ৫০০' মানুষ নিহত হয়েছেন। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।
এছাড়াও হামলায় এখন পর্যন্ত আহত হয়েছেন ৩ হাজারেরও বেশি মানুষ।
সূত্র: বিবিসি
ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনায় আবার ইসরায়েলের হামলা
ইরানের ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইরানের কর্মকর্তারা এ হামলার কথা জানিয়েছেন।
ইরানের কোম প্রদেশের সংকটকালীন ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েল স্থাপনায় আক্রমণ করেছে। তবে হামলার কারণে ওই এলাকার বাসিন্দাদের আপাতত কোনো বিপদ বা হুমকি নেই।
ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার একদিন পর আজ সোমবার ইসরায়েলও সেখানে হামলা চালালো।
গত ১৩ জুন ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত শুরু হওয়ার পর ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনায় একবার হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।
সূত্র: আল জাজিরা
ইরানে সরকার পরিবর্তন হবে না কেন, প্রশ্ন ট্রাম্পের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে সরকার পরিবর্তনের পক্ষে ইঙ্গিত দিয়েছেন। মার্কিন কর্মকর্তারা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলাকে তেহরানের নেতৃত্ব পরিবর্তনের সূচনা নয় বলে মন্তব্য করার মাত্র দুই ঘণ্টা পরই এ ইঙ্গিত দিলেন তিনি।
স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যায় ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, "'শাসক পরিবর্তন' শব্দবন্ধটি ব্যবহার করা রাজনৈতিকভাবে সঠিক নয়। কিন্তু ইরানের বর্তমান শাসনব্যবস্থা যদি ইরানকে আবার মহান করতে না পারে, তাহলে শাসক পরিবর্তন হবে না কেন??? এমআইজিএ!!!' [এমআইজিএ: মেইক ইরান গ্রেট অ্যাগেইন।]
প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ যখন জোর দিয়ে বলেছিলেন, ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িয়ে পড়ার লক্ষ্য কোনোভাবেই শাসন পরিবর্তন নয়, ঠিক সেই মুহূর্তেই এই পোস্ট করলেন ট্রাম্প।
এর আগে রোববারই পেন্টাগনে সাংবাদিকদের হেগসেথ বলেন, 'এই মিশনের লক্ষ্য কখনোই শাসন পরিবর্তন ছিল না, এখনও নয়।'
এছাড়া ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও-ও ফের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনও কূটনৈতিক পথেই অগ্রসর হতে চায়। তারা আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়ায়নি—তাদের লক্ষ্য কেবল তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি।
সূত্র: বিবিসি
ইসরায়েলকে কঠোর শাস্তির অঙ্গীকার খামেনির
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি অঙ্গীকার করেছেন, ইসরায়েলকে 'শাস্তি দেওয়া অব্যাহত থাকবে'। ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় যুক্তরাষ্ট্র যোগ দেওয়ার পর এটি তার প্রথম প্রকাশ্য প্রতিক্রিয়া।
এক এক্স পোস্টে দেওয়া বিবৃতিতে খামেনি বলেন, 'জায়নবাদী শত্রু এক বিরাট ভুল করেছে, এক গুরুতর অপরাধ করেছে। এর শাস্তি তাকে পেতেই হবে এবং সে শাস্তি পাচ্ছেও। ঠিক এই মুহূর্তেই তাকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।'
ওই পোস্টের সঙ্গে একটি ছবিও জুড়ে দেওয়া হয়, যেখানে জ্বলন্ত ভবনের পটভূমিতে 'স্টার অভ ডেভিড' (ইহুদিদের প্রতীক) খচিত একটি জ্বলন্ত মাথার খুলি দেখানো হয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা
তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে
পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার প্রতিক্রিয়ায় হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে ইরানের পার্লামেন্ট। এর জেরে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে।
এএফপি জানিয়েছে, লেনদেন শুরু হতেই ব্রেন্ট ও মার্কিন ক্রুড তেলের প্রধান সূচক ডব্লিউটিআই—উভয়ের দামই ৪ শতাংশের বেশি বেড়ে জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
তবে এই মূল্যবৃদ্ধির গতি পরে কিছুটা কমে আসে। গ্রিনিচ মান সময় রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ব্রেন্টের দাম ২.২ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৭৯.২০ ডলারে এবং ডব্লিউটিআই-এর দাম ২.১ শতাংশ বেড়ে ৭৫.৯৮ ডলারে দাঁড়ায়।
জাপানের আর্থিক প্রতিষ্ঠান এমইউএফজি গ্রুপের অর্থনীতিবিদরা এএফপিকে বলেছেন, 'এই যুদ্ধের ফলাফল ও মেয়াদ নিয়ে ব্যাপক অনিশ্চয়তার' কারণে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০ ডলার পর্যন্ত বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইরান বিশ্বের নবম বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ। তেহরান প্রতিদিন প্রায় ৩৩ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন করে। উৎপাদিত তেলের অর্ধেকের কিছু কম দেশটি রপ্তানি করে, বাকিটা অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে ব্যবহার করে।
সূত্র: আল জাজিরা
হরমুজ প্রণালী খোলা রাখতে চীনের দ্বারস্থ ওয়াশিংটন
ইরান যাতে হরমুজ প্রণালী বন্ধ না করে, সেজন্য বোঝাতে চীনকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এ আহ্বান জানান।
রুবিওর এই মন্তব্য ফক্স নিউজের "সানডে মর্নিং ফিউচারস উইথ মারিয়া বার্তিরোমো"-এর একটি অনুষ্ঠানে দেখানো হয়। এরপর ইরানের প্রেস টিভি পরবর্তীতে একটি প্রতিবেদনে জানায়, ইরানের সংসদ হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এ প্রণালী দিয়ে বিশ্বের ২০ শতাংশ তেল ও গ্যাস পরিবহন করা হয়।

হরমুজ প্রণালী বন্ধের প্রভাব সম্পর্কে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'এটি তাদের জন্য অর্থনৈতিকভাবে আত্মহত্যা হবে। এবং আমাদের কাছে তা মোকাবিলা করার বিকল্প থাকবে, তবে অন্যান্য দেশগুলোকেও এটি নজরে রাখতে হবে। এটি আমাদের চেয়ে অন্যান্য দেশের অর্থনীতির উপর অনেক বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে।'
রুবিও বলেছেন যে, প্রণালী বন্ধ করার পদক্ষেপ ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি করবে এবং এর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশই প্রতিক্রিয়া জানাবে।
ওয়াশিংটনের এমন আহ্বানে চীনের দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
সূত্র: রয়টার্স