ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেল মনোনয়ন দেওয়ার পরদিনই ইরানের উপর মার্কিন হামলার নিন্দা জানালো পাকিস্তান

ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে 'সিদ্ধান্তমূলক কূটনৈতিক হস্তক্ষেপের' জন্য ২০২৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শাস্তি পুরস্কার দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। এর একদিন পরই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা করেছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, "আমরা ওই অঞ্চলে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।" বিবৃতিটি আমেরিকান যুদ্ধবিমান এবং সাবমেরিনের ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলার পর প্রকাশিত হয়। এ হামলার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে জড়িয়েছে।
ইরানের সঙ্গে ৯০০ কিলোমিটার সীমান্ত থাকা পাকিস্তান বলেছে, 'এসব হামলা আন্তর্জাতিক আইনের সমস্ত নিয়ম ভঙ্গ করেছে এবং ইরানের জাতিসংঘের চার্টার অনুসারে আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।'
আরও বলা হয়েছে, 'ইরানের বিরুদ্ধে চলমান আগ্রাসনের ফলে উত্তেজনা এবং সহিংসতার যে পর্যায়ে বেড়েছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। যদি উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়, তবে এ অঞ্চল ও তার বাইরেও মারাত্মক ফলাফল হবে।'
ইসলামাবাদ সংঘর্ষটি শেষ করার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলছে, 'সংলাপ এবং কূটনীতি, জাতিসংঘের চার্টারের উদ্দেশ্য এবং মূলনীতি অনুসারে, এই অঞ্চলের সঙ্কট সমাধানের একমাত্র কার্যকর পথ।'
শনিবার পাকিস্তান সরকার জানিয়েছিল যে তারা আগামী বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ঘোষণা তিন দিন পর ট্রাম্প পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান আসিম মুনিরকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানান।
পাকিস্তান সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'পাকিস্তান সরকার ২০২৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার সিদ্ধান্তমূলক কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সংকটে তার গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বের স্বীকৃতির জন্য।'
এপ্রিল ২২ তারিখে জম্মু-কাশ্মিরের পহেলগাম এলাকায় হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনার পর ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। ৭ মে ভারত অপারেশন সিন্দুর চালালে পাকিস্তান পরে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালায়। প্রতিশোধস্বরূপ, ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের বিমানবন্দরগুলোতে হামলা চালায়। ১০ মে একটি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়।
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা
ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার বলেছিলেন, "আমেরিকান প্লেনগুলো ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় একটি সফল সম্পন্ন করেছে। সেগুলো হলো- ফোর্ডো, নাতাঞ্জ এবং এসফাহান।"
ট্রাম্প বলেন, 'ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক সমৃদ্ধির সুবিধাগুলো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। এই হামলা একটি বৈশ্বিক সামরিক সাফল্য।'
তিনি ইরানকে "মধ্যপ্রাচ্যের বুলিই" বলে আখ্যায়িত করেন এবং বলেন, ইরানকে এখন শান্তির পথে আসতে হবে।
ট্রাম্প বলেন, 'যদি তারা তা না করে, তবে ভবিষ্যৎ হামলা আরও বড় এবং অনেক সহজ হবে।'
ট্রাম্প হুমকি দিয়ে বলেন, 'ইরান যদি শান্তির পথে তাড়াতাড়ি না আসে, তবে আমরা অন্যান্য লক্ষ্যগুলোকে নির্দিষ্টভাবে, দ্রুত এবং দক্ষতার সাথে ধ্বংস করব। বেশিরভাগই কয়েক মিনিটের মধ্যে ধ্বংস করা সম্ভব।'