খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল ইসরায়েলের, আটকে দেন ট্রাম্প

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলের পরিকল্পনা আটকে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প—সিবিএস নিউজকে এমন তথ্য জানিয়েছেন তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা।
ওই তিন কর্মকর্তার মধ্যে একজন জানিয়েছেন, ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে স্পষ্টভাবে জানান, খামেনিকে হত্যা 'ভালো কোনো ধারণা' নয়। তবে, এ নিয়ে এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
শুক্রবার ইসরায়েল ইরানে হামলা চালানোর পর থেকেই আলোচনাটি হয়েছে বলে জানা গেছে।
ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনের সত্যতা সরাসরি নিশ্চিত বা অস্বীকার করেননি। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল,মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের আয়াতুল্লাহকে হত্যার একটি পরিকল্পনায় ভেটো দিয়েছিলেন।
নেতানিয়াহু বলেন, 'আমাদের কথোপকথনের অনেক মিথ্যা প্রতিবেদন আছে যা কখনো ঘটেনি। আর আমি সেসব বিষয়ে আলোচনায় যাব না।'
তিনি বলেন, 'অনেক ভুয়া কথা ছড়ানো হচ্ছে—যেসব কথোপকথন আদৌ হয়নি, সেগুলো নিয়েও নানা প্রতিবেদন আসছে। আমি এসব বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।'
নেতানিয়াহু আরও বলেন, 'আমি শুধু এটুকু বলতে পারি, আমরা যা করার দরকার, তা করছি এবং করব। আমার বিশ্বাস, যুক্তরাষ্ট্রও জানে তাদের জন্য কী ভালো। তবে এ বিষয়ে আমি আর কিছু বলব না।'
সিবিএস নিউজকে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, 'নীতিগতভাবে আমরা রাজনৈতিক নেতাদের হত্যা করি না। আমাদের লক্ষ্য পরমাণু ও সামরিক খাত। আমার মনে হয় না, যেসব মানুষ এসব কর্মসূচি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তাদের শান্তিতে ও নিশ্চিন্তে জীবন যাপন করা উচিত।'
ইসরায়েল শুক্রবার প্রথমবারের মতো ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো ও অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়। এরপর থেকে দুই দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। রোববার টানা তৃতীয় দিনের মতো এ হামলা অব্যাহত ছিল।
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা নিয়ে ট্রুথ সোশাল প্ল্যাটফর্মে সর্বশেষ এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, 'ইরান ও ইসরায়েলের চুক্তিতে পৌঁছানো উচিত।' তিনি দাবি করেন, 'ভারত ও পাকিস্তানের মতো এ সংঘাতও আমি থামাতে পারব।'
কানাডায় জি-৭ সম্মেলনে অংশ নিতে রওনা দেওয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাবে। তবে ইসরায়েলকে ইরানের ওপর হামলা বন্ধ করতে বলেছেন কি না, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
রোববার যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরবর্তী পর্যায়ের পারমাণবিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়। শনিবার ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মধ্যস্থতাকারী বদর আল বুসাইদি এ তথ্য জানান।
রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এক কর্মকর্তা জানান, ইসরায়েলের হামলা চলমান অবস্থায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো আলোচনা করতে ইরান রাজি নয়—এ কথা কাতার ও ওমানকে জানিয়েছে তারা।
শনিবার ট্রাম্প বলেন, 'ইরানে হামলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।'
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে আরও বলেন, 'যেকোনোভাবে, যেকোনো রূপে যদি ইরান আমাদের ওপর হামলা চালায়, তবে যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ শক্তি এমনভাবে তোমাদের ওপর নেমে আসবে, যা আগে কখনও দেখা যায়নি।'