চীনের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনার দিনক্ষণ জানালেন ট্রাম্প

উভয়পক্ষের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে ৯ জুন লন্ডনে বৈঠকে বসবেন চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই একথা জানিয়েছেন।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে এক ফোনালাপের একদিন পরে ট্রাম্পের এই ঘোষণা এসেছে। এতে দুই নেতার মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক বার্তায় বলেন, 'আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট, বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লাটনিক এবং বাণিজ্য প্রতিনিধি জামিসন গ্রিয়ার সোমবার (৯ জুন) লন্ডনে চীনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে বৈঠক করবেন। বৈঠকটি খুবই ইতিবাচক হবে বলে আমি আশা করছি।'
এই বৈঠক হবে চলতি বছরে ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে চীনের রপ্তানির ওপর বিপুল শুল্কারোপ করলে—উভয় দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের মাধ্যমে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়। এটি হবে তারপর দুই দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফার বাণিজ্য আলোচনা।
বাণিজ্যযুদ্ধ শুরুর সময়ে চীনের রপ্তানির ওপর যুক্তরাষ্ট্র সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছিল, যার জবাবে বেইজিং মার্কিন পণ্যের আমদানিতে পাল্টা শুল্ক বসায় ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত।
গত মাসে জেনেভায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে উভয় পক্ষই সাময়িকভাবে শুল্ক হার কমাতে সম্মত হয়—যুক্তরাষ্ট্র তা নামিয়ে আনে ৩০ শতাংশে, আর চীন ১০ শতাংশে। তবে এই স্বস্তির মেয়াদ আগস্টের শুরুতেই শেষ হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্প সম্প্রতি অভিযোগ করেন, চীন এই সাময়িক চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। এতে স্পষ্ট হয়, উভয় দেশের মধ্যে মূল বিরোধ এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। মার্কিন কর্মকর্তারা আরও অভিযোগ তুলেছেন, চীন গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের রপ্তানির অনুমোদন প্রক্রিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে ধীর করে দিয়েছে—যা বাণিজ্যযুদ্ধের সময় সীমিত করা হয়েছিল। এতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিল্পখাতে উদ্বেগ দেখা দেয়।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে—চীনের বিরুদ্ধে মাদক তৈরির উপাদান ফেন্টানিল পাচারের অভিযোগ, তাইওয়ান ইস্যু এবং চীনের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত রপ্তানিনির্ভর অর্থনৈতিক মডেল।
দুই দেশের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় আলোচনার ঘোষণা এলেও–উভয়ের মধ্যে শুল্ক জটিলতার দ্রুত নিষ্পত্তি হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।