ভারতেও ইন্টারনেট সেবা দিতে লাইসেন্স পেল ইলন মাস্কের স্টারলিংক

ইলন মাস্কের স্টারলিংক ভারতে বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট যোগাযোগ (স্যাটকম) সেবা চালুর জন্য টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে বহুল প্রত্যাশিত লাইসেন্স পেয়েছে। শুক্রবার (৭ জুন) রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্র।
লাইসেন্স অনুমোদন মাস্কের জন্য বড় সাফল্য, বিশেষ করে এমন সময় যখন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার বিরোধে স্পেসএক্সের ২২ বিলিয়ন ডলারের সরকারি চুক্তি ও মহাকাশ কর্মসূচি অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
ভারতের টেলিযোগাযোগ বিভাগ স্টারলিংক ছাড়াও ইতোমধ্যে ইউটেলস্যাট ওয়ানওয়েব ও রিলায়েন্স জিও-কে একই ধরনের অনুমোদন দিয়েছে।
২০২২ সাল থেকেই ভারতে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করতে চাচ্ছিল স্টারলিংক। এবার বড় এক ধাপ এগোতে পারলেও পুরোপুরি সেবা শুরু করতে আরও কিছু প্রক্রিয়া বাকি রয়েছে।
একজন সূত্র জানান, স্টারলিংককে এখনো ভারতের মহাকাশ নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে একটি আলাদা লাইসেন্স নিতে হবে, যা পেতে তারা অনেকটা কাছাকাছি পৌঁছেছে।
এরপর প্রয়োজন হবে সরকারের কাছ থেকে স্পেকট্রাম বরাদ্দ, গ্রাউন্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার স্থাপন এবং নিরাপত্তা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার। অনুমোদনের আগে তারা কোনো যন্ত্রপাতি বা সেবা বিক্রি করতে পারবে না।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইলন মাস্ক যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে স্টারলিংকের পরিকল্পনা ও নিরাপত্তা শর্ত নিয়ে আলোচনা হয়।
মার্চে, দেশটির শীর্ষ টেলিকম অপারেটর জিও ও ভারতী এয়ারটেল আকস্মিকভাবে স্টারলিংকের যন্ত্রপাতি নিজেদের দোকানে রাখার ঘোষণা দেয়। তবে তারা ব্রডব্যান্ড সেবার ক্ষেত্রে স্টারলিংকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
স্পেকট্রাম বরাদ্দ নিয়ে মাস্ক ও মুকেশ আম্বানির জিওর মধ্যে দীর্ঘদিন বিতর্ক চললেও শেষ পর্যন্ত ভারত সরকার মাস্কের পক্ষেই অবস্থান নেয়, যেখানে স্পেকট্রাম নিলামের পরিবর্তে সরাসরি বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
সম্প্রতি ভারতের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রস্তাব দিয়েছে, স্যাটেলাইট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বার্ষিক আয়ের ৪ শতাংশ সরকারকে দিতে হবে। তবে দেশীয় অপারেটররা বলছে, এই হার খুবই কম এবং এতে স্থানীয় ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ডেলয়েট-এর পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতে স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড সেবার বাজার দাঁড়াবে ১.৯ বিলিয়ন ডলার, যা স্টারলিংক ও অ্যামাজনের কুইপার-এর মতো কোম্পানির জন্য বেশ লাভজনক সম্ভাবনা তৈরি করছে।
অনুবাদ : নাফিসা ইসলাম মেঘা