ইসরায়েলি হামলায় ৯ সন্তান হারানো গাজার সেই চিকিৎসক মারা গেছেন

ইসরায়েলি বিমান হামলায় নয় সন্তান হারানো গাজার আহত ফিলিস্তিনি চিকিৎসক হামদি আল-নাজ্জার গত শনিবার (৩১ মে) মারা গেছেন । খবর বিবিসির
গত ২৩ মে খান ইউনিসে নিজ বাড়িতে ইসরায়েলি হামলায় গুরুতর আহত হন ৪০ বছর বয়সী হামদি। স্ত্রী ডা. আলা আল-নাজ্জারকে কর্মস্থল নাসের হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে বাড়িতে ফেরার পরপরই তাদের ওপর এই হামলা হয়।
হামলায় তাদের নয় সন্তান নিহত হন এবং আরেক সন্তান মারাত্মকভাবে আহত হন। হামদি মস্তিষ্ক ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের আঘাত নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন, অবশেষে শনিবার তার মৃত্যু হয়।
বর্তমানে তার স্ত্রী আলা এবং ১১ বছরের ছেলে আদম [হাসপাতালে চিকিৎসাধীন] তার পরিবারের জীবিত সদস্য।
এ ঘটনার বিষয়ে ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) জানায়, হামলায় কোনো নিরীহ ব্যক্তি আহত হয়েছে কি-না, তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
ডা. হামদি ও তার স্ত্রী খান ইউনিসে একটি বেসরকারি মেডিকেল কম্পাউন্ড প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। হামদি ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান।
তার ভাই ডা. আলি জানান, গরিব রোগীদের তিনি বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতেন।
স্থানীয় সূত্রের বরাতে জানা গেছে, নিহত সন্তানদের বয়স ছয় মাস থেকে ১২ বছরের মধ্যে।
নাসের হাসপাতালে কর্মরত বুলগেরীয় চিকিৎসক ডা. মিলেনা জানান, হামলায় হামদির মস্তিষ্ক, ফুসফুস, ডান হাত ও কিডনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আদমের অস্ত্রোপচারে যুক্ত থাকা ব্রিটিশ সার্জন গ্রায়েম গ্রুম বলেন, 'একজন শিশুরোগ চিকিৎসক মা হয়েও আলা নিজের প্রায় সব সন্তান হারিয়েছেন—এটি এক নিষ্ঠুর বাস্তবতা।'
আদমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ইতালিতে নেওয়ার আবেদন জানিয়ে চাচা ডা. আলি ইতালির লা রিপুবলিকা পত্রিকায় বলেন, 'আমি ইতালির সরকারকে অনুরোধ করছি, তাকে বাঁচান।'
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ইতালি জানায়, গুরুতর আহত আদমকে ইতালিতে চিকিৎসার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত ও ২৫১ জন জিম্মি হন। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে।
গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলমান যুদ্ধকালে অন্তত ৫৪ হাজার ৪১৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।