যেভাবে পাইলট ছাড়াই ২০০ যাত্রী নিয়ে জার্মানি থেকে স্পেনে গেল এক বিমান

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে জার্মানি থেকে স্পেনের উদ্দেশে যাত্রাকালীন একটি যাত্রীবাহী বিমান প্রায় ১০ মিনিট ধরে কোনো পাইলট ছাড়াই উড়েছিল। বিমানে তখন ২০০ জনের বেশি যাত্রী ছিলেন।
ঘটনাটি ঘটেছিল লুফথানসার একটি এয়ারবাস এ৩২১ বিমানে। এটি ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে স্পেনের সেভিয়ায় যাচ্ছিল। গত বৃহস্পতিবার স্পেনের তদন্তকারী দল চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করলে বিষয়টি সামনে আসে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গন্তব্যে পৌঁছাতে আধাঘণ্টা বাকি থাকতে বিমানের ক্যাপ্টেন বাথরুমে যান। তার আগে ককপিটে থাকা ফার্স্ট অফিসারকে সুস্থ বলেই মনে হয়েছিল তার। কিন্তু আট মিনিট পর ক্যাপ্টেন ফিরে এসে ককপিটে ঢুকতে ব্যর্থ হন।
তদন্তকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ফার্স্ট অফিসার জানান, ওই সময় তিনি হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। ক্যাপ্টেন পাঁচবার সুরক্ষা কোড ব্যাবহার করে ককপিটের দরজা খোলার চেষ্টা করেন এবং একইসঙ্গে একজন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট ইন্টারকমে যোগাযোগের চেষ্টা চালান। কোনো সাড়া না পেয়ে শেষমেশ ক্যাপ্টেন জরুরি কোড ব্যবহার করেন।
কোডের টাইমার শেষ হওয়ার আগেই ফার্স্ট অফিসার কিছুটা সাড়া ফিরে পেয়ে দরজা খুলে দেন। তখন তাকে অস্বাভাবিকভাবে নড়াচড়া করতে, ঘেমে যেতে ও ফ্যাকাসে দেখায় বলে জানানো হয়েছে। এরপর ক্যাপ্টেন সাহায্যের জন্য ডাকেন।
তখন বিমানে থাকা কেবিন ক্রু ও যাত্রীদের মধ্যে থাকা একজন চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দেন এবং ক্যাপ্টেন কাছের বিমানবন্দর মাদ্রিদে বিমানটি অবতরণ করান। পরে ফার্স্ট অফিসারকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে তদন্তকারীরা জানান, ওই ফার্স্ট অফিসার খিঁচুনি বা 'সিজার ডিসঅর্ডার'-এর কারণে আচমকা মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়েছিলেন।
স্পেনের বেসামরিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানায়, এ ধরনের রোগ সাধারণত মেডিকেল পরীক্ষায় ধরা পড়ে না, যদি না উপসর্গগুলি পরীক্ষা চলাকালীন সময় বা আগে থেকেই প্রকাশ পেয়ে থাকে।
ঘটনাটি সামনে আসার পর তদন্তকারীরা ফ্লাইট ডেকে একমাত্র পাইলট থাকার ঝুঁকি পুনর্মূল্যায়ন করার লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এভিয়েশন সেফটি এজেন্সিকে (ইএএসএ) বিষয়টি সব এয়ারলাইন্সকে জানাতে সুপারিশ করেছে।