নতুন পোপ নির্বাচন হয়নি, জানান দিলো সিস্টিন চ্যাপেলের কালো ধোঁয়া

সিস্টিন চ্যাপেলের ছাদে বৃহস্পতিবার (৮ মে) আবারও কালো ধোঁয়া দেখা গেছে। এর মানে ক্যাথলিক কার্ডিনালরা এখনও পোপ নির্বাচনে একমত হতে পারেননি।
সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে জড়ো হওয়া হাজারো মানুষ এই ধোঁয়ার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় ভোটগ্রহণের পরপরই কার্ডিনালরা দুবার ব্যালট দেন।
৮০ বছরের কম বয়সি ১৩৩ জন কার্ডিনাল এই গোপন ধর্মীয় প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছেন। পোপ ফ্রান্সিসের উত্তরসূরি বাছাই না হওয়া পর্যন্ত তাদের বাইরে যাওয়ার অনুমতি নেই।
ভোটের পর ব্যালট পুড়িয়ে (রাসায়নিক মেশানো হয়) ধোঁয়ার রং দিয়ে ফলাফল জানানো হয়। কালো ধোঁয়া মানে পোপ নির্বাচিত হননি, আর সাদা ধোঁয়া মানে নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন।
গত বুধবার প্রথম ব্যালটেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বৃহস্পতিবার বিকেলে আরও দুটি ব্যালট হওয়ার কথা রয়েছে। বিকেল ৫:৩০টার পর আবার ধোঁয়া দেখা যেতে পারে।
কার্ডিনালরা প্রতিদিন সর্বোচ্চ চারবার ব্যালট দিতে পারেন। কেউ দুই-তৃতীয়াংশ ভোট না পাওয়া পর্যন্ত ভোট চলতে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ক্যারোলাইনা থেকে আসা টম বারবিটা বলেন, 'ফ্রান্সিস ছিলেন একজন অসাধারণ মানুষ। আমি আশা করি, তারা [কার্ডিনালগন] তার মতো কাউকে বেছে নেবেন।'
আধুনিক যুগে প্রথম দিনের ব্যালটে কোনো পোপ নির্বাচিত হননি। তবে সাম্প্রতিক কনক্লেভগুলোর ইতিহাস বলছে, দ্বিতীয় দিনেই সিদ্ধান্ত এসেছে।
২০১৩ সালে দ্বিতীয় দিনের সন্ধ্যায় নির্বাচিত হন ল্যাটিন আমেরিকার প্রথম পোপ ফ্রান্সিস। ২০০৫ সালে ষোড়শ বেনেডিক্টও দ্বিতীয় দিনেই নির্বাচিত হন।
এবারের কনক্লেভে ৭০টি দেশের ১৩৩ জন কার্ডিনাল অংশ নিচ্ছেন, যা নতুন রেকর্ড। ২০১৩ সালে অংশ নিয়েছিলেন ৪৮টি দেশের ১১৫ জন।
এখনও কোনো প্রার্থী স্পষ্টভাবে এগিয়ে নেই। তবে ইতালির পিয়েত্রো প্যারোলিন ও ফিলিপাইনের লুইস আন্তোনিও ট্যাগলের নাম আলোচনায় রয়েছে।
দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন না পেলে ভোট অন্য প্রার্থীদের দিকেও যেতে পারে। তখন ভূগোল, মতাদর্শ ও ভাষাগত বিষয়গুলো বিবেচনায় আসতে পারে।
আরও কয়েকজন সম্ভাব্য প্রার্থী হলেন—ফ্রান্সের জ্যঁ-মার্ক অ্যাভেলিন, হাঙ্গেরির পিটার এরদো, যুক্তরাষ্ট্রের রবার্ট প্রিভোস্ট, ইতালির পিয়েরবাত্তিস্তা পিৎজাবাল্লা ও ফিলিপাইনের পাবলো ভার্জিলিও ডেভিড।
কনক্লেভ চলাকালে কার্ডিনালরা বাইরের জগত থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন থাকেন। তাদের মোবাইল ও কম্পিউটার জমা রাখা হয়। তারা সিস্টিন চ্যাপেলে ভোট দেন এবং ভ্যাটিকানের গেস্টহাউসে অবস্থান করেন।
ফ্রান্সিসের আমলে চার্চের উদারতা বেড়েছে, যা ঐতিহ্যবাদী ও আধুনিকপন্থীদের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি করেছে। কেউ চান সংস্কারের ধারাবাহিকতা, কেউ চান স্থিতিশীলতা ও নিয়মমাফিক নেতৃত্ব।