ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে অচলাবস্থা তৈরি হলে যেকোনো সময় পারমাণবিক যুদ্ধ হতে পারে: খাজা আসিফ

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা অবশ্যই রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে যদি কোনো অচলাবস্থা তৈরি হয়, তাহলে এ ধরনের যুদ্ধ হতে পারে।
আজ বুধবার (৭ মে) জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ বলেন, 'যদি তারা (ভারত) এই অঞ্চলে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ চাপিয়ে দেয় এবং এর ফলে যদি এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয় যাতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়, তাহলে যেকোনো সময় পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু হতে পারে।'
তিনি আরও বলেন, 'যদি তারা (ভারত) এ পরিস্থিতি আরও খারাপ করে এবং এমন একটি যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হয়, যা উভয়পক্ষকে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ইঙ্গিত দেয়, তাহলে এর পুরো দায়ভার ভারতের ওপরই বর্তাবে।'
গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এরই মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে পাকিস্তানের ছয়টি স্থানে বিমান হামলা চালায় ভারত।
ভারতের দাবি, তারা পাকিস্তানের 'সন্ত্রাসী স্থাপনাগুলো' লক্ষ্য করে এ হামলা চালায়।
এ হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তান। ভারতের এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে 'কাপুরুষোচিত' আখ্যায়িত করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এর সমুচিত জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
পাকিস্তান জানিয়েছে, ভারত যেসব স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালিয়েছে, সেগুলোর কোনোটিই সন্ত্রাসীদের ক্যাম্প বা আস্তানা নয়।
এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, পেহেলগাম হামলার পর থেকে ভারত যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে, বিশেষ করে গত রাতের বিমান হামলাসহ—তাতে তা একটি 'সাজানো নাটকীয় মহড়া'র মতো বলেই মনে হচ্ছে।
তিনি বলেন, 'আসলে কী ঘটেছে, তা সময়ই বলে দেবে।' তিনি আরও বলেন, 'আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, পাকিস্তান এখনো সংযম দেখাচ্ছে।'
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের হামলাকে 'হতাশাজনক' বলে উল্লেখ করেছেন। শিগগির এই সংকটের সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
সংঘাতপূর্ণ এই পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বিশ্ব নিতে পারবে না বলে সতর্ক করেছেন তিনি। উভয়পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।