ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে পাকিস্তানজুড়ে কেএফসিতে হামলা, নিহত ১
গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রতিবাদে পাকিস্তানজুড়ে কেএফসির বিভিন্ন শাখায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। ঘটনার পর দেশজুড়ে কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। খবর বিবিসির।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, কেএফসি যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইসরায়েলের প্রতীক হওয়ায় তারা বিক্ষোভের মাধ্যমে এই চেইন শপের পণ্য বর্জনের আহ্বান জানাচ্ছেন।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তালাল চৌধুরী বিবিসিকে জানান, গত এক সপ্তাহে দেশজুড়ে অন্তত ২০টি কেএফসি শাখায় হামলার চেষ্টা হয়েছে।
সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, লোহার রড হাতে জনতা কেএফসির দোকানে ঢুকে পড়ছেন এবং দোকান পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। পুলিশ আসার আগেই করাচিতে দুটি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এক ভিডিওতে একজনকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, 'আপনারা যেই টাকা আয় করছেন, সেই টাকা দিয়ে গুলি কেনা হচ্ছে।'
এসব ঘটনার নিন্দা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী তালাল চৌধুরী বলেন, "কেএফসিতে যারা কাজ করেন, তাদের বেশিরভাগই পাকিস্তানি। এখানকার মুনাফাও পাকিস্তানিদের কাছেই আসে।"
১৪ এপ্রিল লাহোরের উপকণ্ঠে শেখুপুরায় এক বিক্ষোভ চলাকালে গুলিতে নিহত হন কেএফসির কর্মী আসিফ নওয়াজ (৪৫)। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেখুপুরা আঞ্চলিক পুলিশ কর্মকর্তা আথার ইসমাইল।
তিনি জানান, নওয়াজ বিক্ষোভের সময় রান্নাঘরে কাজ করছিলেন। ১০০ ফুট দূর থেকে ছোড়া পিস্তলের একটি গুলি তার কাঁধে লাগে এবং শরীর ভেদ করে বুকে চলে যায়—এতে তিনি মারা যান।
তিনি আরও জানান, নওয়াজকে লক্ষ্য করে এ গুলি চালানো হয়েছিল—এমন কোনো প্রমাণ মেলেনি। ঘটনাটি 'দুর্ঘটনাবশত' ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে, গাজায় চলমান যুদ্ধের নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রভাবশালী অনেক ব্যক্তি। ইসলামপন্থি দল তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি) ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ডাক দিলেও কেএফসির ওপর হামলার সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছে।
পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় সুন্নি আলেম মুফতি তাকি উসমানিও ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে উভয়পক্ষই সহিংসতা এড়িয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের আহ্বান জানিয়েছে।
