ওয়াকফ আইন নিয়ে সহিংসতা: মুর্শিদাবাদে গ্রেপ্তার দুই শতাধিক

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে বিতর্কিত ওয়াকফ আইন ঘিরে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ (১৪ এপ্রিল) পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, গত ৩৬ ঘণ্টায় মুর্শিদাবাদ জেলায় বড় ধরনের কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, নতুন করে আরও এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে গেছে।
রাজ্য পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আইনশৃঙ্খলা) জাওয়েদ শামীম বলেন, 'আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার হলো স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরিয়ে আনা। গত ৩৬ ঘণ্টায় কোনো ঘটনা ঘটেনি ।'
তিনি আরও জানান, মুর্শিদাবাদের সহিংসতা কবলিত এলাকা থেকে যারা পালিয়ে মালদা জেলায় আশ্রয় নিয়েছিলেন, তারা ধীরে ধীরে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ১৯ জন নিজ বাড়িতে ফিরে এসেছেন।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, প্রায় ২০০টি পরিবার নদী পার হয়ে পালিয়ে পাশ্ববর্তী মালদা জেলার বৈষ্ণবনগরের একটি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে।
তবে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো, বিশেষ করে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), অভিযোগ করেছে যে মুর্শিদাবাদ থেকে প্রায় ৪০০ মানুষ সহিংসতা থেকে বাঁচতে নিজ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
শিগগিরই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করে শামীম বলেন, ১১ ও ১২ এপ্রিলের সহিংসতার জন্য দায়ীদের ছাড় দেওয়া হবে না।
নিষিদ্ধ পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়ার (পিএফআই) মতো সংগঠনের সদস্যরা এই সহিংসতায় জড়িত থাকতে পারে বলে বিরোধী দলগুলোর করা অভিযোগের বিষয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, 'বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন।'
তিনি বলেন, 'গত ১৫ দিনে রাজ্যে অনেক অনুষ্ঠান ও উৎসবের পরিকল্পনা ছিল। সবকিছুই শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে। কিন্তু শুক্রবার ও শনিবার (১১ ও ১২ এপ্রিল) যেভাবে বিপুল জনসমাগম হয়েছিল এবং একসঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় অস্থিরতা শুরু হয়েছিল, তাতে পুলিশের পক্ষে সব জায়গায় সঙ্গে সঙ্গে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়ে।'
শামীম আরও বলেন, ধুলিয়ানে একই পরিবারের দুই সদস্যকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাটি একটি `নৃশংস অপরাধ'; এবং যারা এই ঘটনার জন্য দায়ী, তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
গত ১২ এপ্রিল ওয়াকফ (সংশোধনী) বিলের প্রতিবাদে শুরু হওয়া সহিংসতায় তিনজন নিহত হন এবং ১৮ জন পুলিশ সদস্য আহত হন।
মুর্শিদাবাদে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী (সিএপিএফ) ওই এলাকায় রুট মার্চ করছে।
সিআরপিএফ-এর ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি) বীরেন্দ্র কুমার শর্মা জেলায় উপস্থিত আছেন, তার সঙ্গে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারাও রয়েছেন।
আইজি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রুট মার্চ পরিচালনা করার এবং জনগণের মধ্যে আস্থা বাড়ানোর চেষ্টার নির্দেশ দিয়েছেন।