ইরান-চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা: ট্রাম্পের দূত উইটকফ রাশিয়ায়, বৈঠক হতে পারে পুতিনের সঙ্গে

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাশিয়া সফরে গিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। কারণ, মস্কোর ঘনিষ্ঠ মিত্র ইরান ও চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা বর্তমানে তুঙ্গে।
ক্রেমলিন উইটকফের আগমনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। রুশ সংবাদমাধ্যম ইজভেস্তিয়া'র প্রকাশিত এক ভিডিওতে উইটকফকে রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সেন্ট পিটার্সবার্গের একটি হোটেল থেকে বের হতে দেখা গেছে। তার সঙ্গে ছিলেন পুতিনের বিনিয়োগ বিষয়ক দূত কিরিল দিমিত্রিভ।
উইটকফ পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন কি না, সে বিষয়ে কিছু নিশ্চিত করেনি ক্রেমলিন। তবে উইটকফের সফর নিয়ে শুক্রবার অ্যাক্সিওস এক প্রতিবেদনে জানায়, বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে—উইটকফ ও পুতিনের সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে।
রাশিয়ার আর্কটিক অঞ্চল ও বিরল মৃত্তিকা খনিজে সম্ভাব্য যৌথ বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষাপটে মস্কো-ওয়াশিংটন সম্পর্কে সেতুবন্ধ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন উইটকফ। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সম্ভাব্য শান্তিচুক্তির রূপরেখা খোঁজার মধ্যেই এ আলোচনা চলছে।
শুক্রবার পুতিন সেন্ট পিটার্সবার্গেই ছিলেন। সেখানে তিনি রাশিয়ান নৌবাহিনীর উন্নয়ন নিয়ে একটি 'অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ' বৈঠকে অংশ নেন। ক্রেমলিন জানিয়েছে, রুশ নৌবাহিনী বর্তমানে একটি বড় আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ প্রক্রিয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
চলতি বছরে এটি যদি উইটকফ ও পুতিনের তৃতীয় বৈঠক হয়, তবে তা হবে এমন এক সময়ে, যখন ইরান ও চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং বেইজিংয়ের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আর এ দুটি দেশের সঙ্গেই রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
তেহরান পারমাণবিক চুক্তিতে রাজি না হলে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এরই প্রেক্ষিতে উইটকফের শনিবার ওমানে ইরানের সঙ্গে ওই বিষয় নিয়ে আলোচনা করার কথা রয়েছে। এদিকে, মস্কো বহুবার কূটনৈতিকভাবে সমাধানের জন্য সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক হয়। উভয় দেশই জানিয়েছে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনর্গঠনের পাশাপাশি কূটনৈতিক মিশনের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফেরানোর পথে অগ্রগতি হয়েছে।
তবে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সম্ভাব্য শান্তিচুক্তির আগে যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে মার্কিন-রাশিয়া সংলাপ থমকে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। পূর্ণ যুদ্ধবিরতির শর্ত নিয়ে দুই পক্ষের মতপার্থক্যই এর মূল কারণ।
এদিকে, ধৈর্য হারানোর ইঙ্গিত দিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা দেশগুলোর ওপর দ্বিতীয় দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারেন, যদি তিনি মনে করেন মস্কো ইউক্রেন ইস্যুতে চুক্তির প্রতিশ্রুতি মানছে না।