Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Thursday
June 12, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
THURSDAY, JUNE 12, 2025
শুল্কে বিশ্ববাজার কাঁপিয়ে হঠাৎ বিরতি: ট্রাম্পের রাজনৈতিক কৌশল না নীতির ব্যর্থতা?

আন্তর্জাতিক

দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস
10 April, 2025, 11:50 am
Last modified: 10 April, 2025, 12:12 pm

Related News

  • ইরানের বাড়তি পারমাণবিক উপাদান সরিয়ে নিতে প্রস্তুত রাশিয়া
  • ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী অভিযান: লস অ্যাঞ্জেলেসে কারফিউ জারি
  • অপ্রস্তুত ন্যাশনাল গার্ড: প্রকাশ পেল সৈন্যদের মেঝেতে শুয়ে থাকার দৃশ্য!
  • ‘ন্যাশনাল গার্ড’ মোতায়েন ইস্যুতে মামলা করায় ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নরকে গ্রেপ্তার করা উচিত: ট্রাম্প
  • লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসনবিরোধী অভিযান: আরও ২০০০ ন্যাশনাল গার্ড, ৭০০ মেরিন পাঠালেন ট্রাম্প

শুল্কে বিশ্ববাজার কাঁপিয়ে হঠাৎ বিরতি: ট্রাম্পের রাজনৈতিক কৌশল না নীতির ব্যর্থতা?

ট্রাম্পের এই নীতিগত পরিবর্তনের কথা অনেক সিনিয়র কর্মকর্তা জানতেনই না। এমনকি ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ জেমিসন গ্রিয়ার সিদ্ধান্তের খবর পান তখনই, যখন তিনি কংগ্রেসের এক কমিটির সামনে শুল্কনীতি রক্ষা করতে বক্তব্য দিচ্ছিলেন।
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস
10 April, 2025, 11:50 am
Last modified: 10 April, 2025, 12:12 pm
ইলাস্ট্রেশন: ফিন্যান্সিয়াল টাইমস

গত এক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অর্থনৈতিক অস্থিরতার মাঝেও নিজ নীতিকে সঠিক দাবি করে চলছিলেন। তার চাপিয়ে দেওয়া শুল্কনীতি বিশ্ববাজারে তোলপাড় সৃষ্টি করলেও তিনি ছিলেন অনড়।

মঙ্গলবার রিপাবলিকানদের এক বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, 'আমি জানি আমি কী করছি।' এরপর বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 'ট্রুথ সোশ্যাল'-এ লিখলেন, 'ঠাণ্ডা মাথায় থাকো! সব ঠিক হয়ে যাবে।'

সেদিন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে আরেকটি পোস্টে লেখেন, 'এটা কেনার দারুণ সময়!' অর্থাৎ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করার জন্য উপযুক্ত মুহূর্ত বলেই তিনি মনে করছিলেন।

তবে শেষ পর্যন্ত বাজারই তাঁকে নীতিতে পরিবর্তন আনতে বাধ্য করে।

বিশেষ করে সরকারি বন্ডের সুদের হার হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় অর্থনৈতিক অস্থিরতা আরও বেড়ে যায়। ফলে বুধবার বিকেলে ট্রাম্প বেশিরভাগ দেশের জন্য ৯০ দিনের জন্য 'পারস্পরিক শুল্ক' স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন। প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ চারটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সাংবাদিকদের কাছে সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, 'আমি মনে করলাম মানুষ একটু বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। সবাই একটু ঘাবড়ে গিয়েছিল, একটু বেশি চঞ্চল হয়ে উঠেছিল।'

তবে এই সিদ্ধান্তের পেছনে প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টাদেরও বড় ভূমিকা ছিল। অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সসহ হোয়াইট হাউসের সিনিয়র কর্মকর্তারা চাইছিলেন ট্রাম্প যেন একটি পরিকল্পিত ও সুসংগঠিত কৌশলের পথে হাঁটেন। তারা চীনের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিতে চাইলেও অন্য দেশগুলোর সঙ্গে একটি ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্য সম্পর্ক বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছিলেন।

‘বেশিরভাগ দেশের’ ওপর শুল্ক ৯০ দিন স্থগিত, তবে চীনের ওপর বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করবেন ট্রাম্প

ট্রাম্পের হঠাৎ সিদ্ধান্তে তার দলকে পরে সংবাদমাধ্যমে এটিকে একটি 'পরিকল্পিত কৌশল' হিসেবে উপস্থাপন করতে হয়। এমনকি অর্থমন্ত্রী বেসেন্ট দাবি করেন, বাজারের চাপের সঙ্গে এই সিদ্ধান্তের কোনও সম্পর্ক নেই।

কিন্তু বুধবার যখন ট্রাম্প নিজে সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দেন, তখন তিনি বলেন—এই সিদ্ধান্ত এসেছে তার 'অন্তর্জ্ঞান' থেকে, কারণ এমন কিছু সিদ্ধান্ত কাগজ-কলমে হিসাব করে নেওয়া সম্ভব নয়।

আশ্চর্যের বিষয়, ট্রাম্পের এই নীতিগত পরিবর্তনের কথা অনেক সিনিয়র কর্মকর্তা জানতেনই না। এমনকি ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ জেমিসন গ্রিয়ার সিদ্ধান্তের খবর পান তখনই, যখন তিনি কংগ্রেসের এক কমিটির সামনে শুল্কনীতি রক্ষা করতে বক্তব্য দিচ্ছিলেন।

যদিও প্রেসিডেন্টের শুল্ক 'বিরতি' ঘোষণার নেপথ্যে অর্থমন্ত্রী বেসেন্টের অবদান ছিল বলে অনেকে বলছেন, তবে ট্রাম্পের উপদেষ্টারাই মনে করছেন, আসল চালক ছিল বন্ড বাজার।

কারণ, ট্রাম্পের এই শুল্ক বাজি অর্থনীতিকে একটি ভয়াবহ সংকটের মুখে ঠেলে দিতে পারত। আর ২০০৮ সালের বৈশ্বিক মন্দা কিংবা ২০২০ সালের মহামারির মতো নয়, এই সংকটের দায় এককভাবে শুধু একজনের ঘাড়েই বর্তাত।

বাজার ধসের দিনে ট্রাম্পের 'ধোঁয়াশা' নীতি

'আমেরিকাকে আবার ধনী করব'—শুল্কনীতি ঘোষণা করতে গিয়ে এটাই বলেছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে পরিকল্পনার বাস্তব রূপরেখা কী, তা নিয়ে শুরু থেকেই অনিশ্চয়তা ছিল।

গত সপ্তাহে শুল্ক আরোপের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের অর্থনৈতিক টিমের মধ্যে কীভাবে এ শুল্ক কার্যকর করা হবে, তা নিয়ে বিতর্ক চলেছে।

অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এবং বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লাটনিক সীমিত পরিসরে শুল্ক আরোপের পক্ষে ছিলেন বলে জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত দুই সূত্র।

তবে হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো ছিলেন সবচেয়ে আগ্রাসী। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন শিল্পে বিপ্লব ঘটানোর প্রত্যাশা নিয়ে একটি কড়া শুল্কনীতির পক্ষে ছিলেন।

মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তর অন্যান্য দেশের শুল্ক হার ও বাণিজ্য বাধার আনুমানিক হিসাব দিয়ে একটি ফর্মুলা তৈরি করেছিল, যাতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে তুলনামূলক ভারসাম্য রাখা যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট বেছে নেন একটি সহজ সূত্র—যে দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি বেশি, তাদের ওপর বেশি শুল্ক।

ফলে গত বুধবার যখন শুল্ক ঘোষণা করা হয়, তখনই বিশ্ববাজারে ব্যাপক ধস নামে।

রোববার রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একান্ত বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেন বেসেন্ট। কারণ মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নতুন সপ্তাহের বাজার খুলবে এবং বিনিয়োগকারীরা তখনই ভবিষ্যদ্বাণী করে ফেলেছিলেন—সোমবার হতে চলেছে 'ব্ল্যাক মানডে'।

ওয়াশিংটনে ফেরার পথে এয়ার ফোর্স ওয়ানে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ছিলেন বেসেন্ট। ফ্লাইট চলাকালে তিনি ট্রাম্পকে বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনায় মনোযোগ দেওয়া উচিত এবং বলেন, 'আপনি তো বিশ্বের সেরা চুক্তিকারক।'—এই কথোপকথনের বিষয়ে জানেন এমন চারটি সূত্র এ তথ্য জানায়।

তবে একইসঙ্গে বেসেন্ট প্রেসিডেন্টকে সতর্ক করেন, বাজার এখন স্থিতিশীলতার খোঁজে আছে। তাই তাঁকে স্পষ্ট করে জানাতে হবে, এই শুল্কনীতির শেষ লক্ষ্য কী।

সূত্রগুলো বলছে, ট্রাম্প কিছুটা ব্যাকফুটে গেলেও জানান, এই কষ্ট 'স্বল্পমেয়াদি'—অর্থাৎ একটা ধাক্কা লাগবে, কিন্তু তা সাময়িক। তবে বেসেন্ট তাঁকে মনে করিয়ে দেন, বাজারের ভাষায় এই 'স্বল্পমেয়াদি'ও হতে পারে দীর্ঘ কয়েক মাসের ঝুঁকি।

সোমবার সকালে প্রেসিডেন্ট তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লিখতে যান—'আলোচনা শুরু হচ্ছে'। পরে শব্দটা বদলে লিখলেন—'আলোচনায় বসা হবে'।

সোমবার বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, 'প্রায় প্রতিটি দেশই এখন আলোচনা করতে চাচ্ছে।'

তবে এখানেও একটি বিষয় স্পষ্ট হয়নি—এই শুল্ক তিনি আলোচনার জন্য একটি কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছেন, নাকি এটি একটি স্থায়ী ব্যবস্থা যার মাধ্যমে রাজস্ব বাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন ফিরিয়ে আনা হবে?

ট্রাম্পের কৌশলের শেষ লক্ষ্য নিয়ে তাই এখনও দোটানা রয়ে গেছে, যা বাজারের অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তুলছে।

'নিজের পথে' হাটার জোরেই বিপাকে ট্রাম্প প্রশাসন

ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা যতই অস্পষ্ট হোক না কেন, যে তিনি আগ্রাসী পদক্ষেপ নেবেন—তা আদতে কারও কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল না।

প্রথমবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার সময় থেকেই ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন একটি 'ইউনিভার্সাল বেস লাইন ট্যারিফ' চালুর। তার উপদেষ্টারাও তখন থেকেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, দ্বিতীয় মেয়াদে এসে ট্রাম্প নিজের নীতিতে অটল থাকবেন।

প্রথম মেয়াদে তিনি মনে করতেন, উপদেষ্টারা তাকে বিভিন্ন পদক্ষেপ থেকে বিরত রেখেছিলেন। তাই দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি বলেছেন, এবার তিনি সবকিছু নিজের মতো করে করবেন। এ জন্যই নিজের চারপাশে সাজিয়ে নিয়েছেন এমন একটি টিম, যারা তার 'ইনস্টিংক্ট'-এর (অনুমান বা ধারণা) প্রতি একেবারে বিশ্বস্ত।

ট্রাম্পের বক্তব্য, দশকের পর দশক ধরে বিদেশি দেশগুলো যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে শোষণ করেছে, তার বিরুদ্ধে জবাব দেওয়ার একমাত্র হাতিয়ার হলো শুল্ক। তিনি মনে করেন, এই পন্থায়ই দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করা যাবে।

তবে বিনিয়োগকারী, ওয়াল স্ট্রিটের কর্তাব্যক্তি, এমনকি বড় বড় দাতা ও লবিস্টদের অনেকেই বিশ্বাস করেছিলেন, ট্রাম্প হয়ত হুমকি দিচ্ছেন মাত্র—বাস্তবে এতোটা এগোবেন না। অথবা কেউ হয়ত তাকে বোঝাতে সক্ষম হবেন।

ট্রাম্পের শুল্ক স্থগিতের সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে বড় উত্থান

এমনই চেষ্টায়, বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লাটনিক শুরুতেই গাড়ি শিল্পের জন্য ছাড় দেওয়ার অনুরোধ করেন। কেউ কেউ কফির মতো পণ্য—যার যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন পর্যাপ্ত নয়—সেগুলোর ক্ষেত্রেও ছাড়ের দাবি তোলেন।

অন্যদিকে অর্থনীতিবিদেরা বারবার সতর্ক করেছেন, কঠোর শুল্ক আরোপে বিদেশি পণ্যের দাম বাড়বে, ফলে মূল্যস্ফীতিও ত্বরান্বিত হবে—যা ট্রাম্পের আরেক নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি 'মূল্যস্ফীতি কমানো'-র সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

তবু ট্রাম্প নিজের দীর্ঘদিনের বিশ্বাসেই অটল থাকেন। চার দশক ধরে তার 'শুল্ক তত্ত্ব' রীতিমতো জমাটবদ্ধ। যদি কোনো উপাত্ত বা পরিসংখ্যান তার অভ্যন্তরীণ বোধের সঙ্গে না মেলে, তাহলে তিনি বলেন, এমন তথ্য খুঁজে আনুন যা তার ধারণাকে সমর্থন করে।

এই মনোভাব নিয়ে তিনি এগিয়েই যান, এমনকি তার উপদেষ্টারাও পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলেন না কীভাবে এই নীতিকে জনসমক্ষে ব্যাখ্যা করবেন। এ নিয়ে একাধিকবার বৈঠকে বসেন হোয়াইট হাউসের সিনিয়র স্টাফরা। উদ্দেশ্য ছিল—যেন অন্তত জনমতকে বোঝানো যায়, এই অর্থনৈতিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আসলে যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই উপকারী।

শুল্ক আরোপের প্রথম কয়েকদিনে একটা দৃশ্যপট তৈরি হয়, যা ট্রাম্প উপভোগ করতেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা 'চুক্তির আশায়' তার সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন। মঙ্গলবার রাতে নিজেই বলেছিলেন—'তারা সবাই এসে আমার পেছনে ঘোরাফেরা করছিল।'

প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই ৭৫টির বেশি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

তবে যতই দাপট দেখানো হোক না কেন, এক সময় সতর্ক সংকেতগুলো উপেক্ষা করার মতো রইল না। বাজারের অস্থিরতা, বন্ডের সুদের হারে হঠাৎ উল্লম্ফন, এবং বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক শেষমেশ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকেও পিছু হটতে বাধ্য করে।

অভ্যন্তরীণ চাপে শুল্কনীতি থেকে পিছু হটলেন ট্রাম্প

বুধবার সকালে মার্কিন জনগণকে শেয়ার কেনার পরামর্শ দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে দেশি-বিদেশি কোম্পানিগুলোর উদ্দেশে আহ্বান জানান—তারা যেন তাদের কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তর করে।

কিন্তু সেই সময় কেউই আঁচ করতে পারেননি, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্প তাঁর অবস্থান পাল্টে অধিকাংশ শুল্কের ওপর ৯০ দিনের বিরতি ঘোষণা করবেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তের পর শেয়ারবাজারে দ্রুত ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়, যা নতুন প্রশ্নের জন্ম দেয়—ট্রাম্পের সকালে দেওয়া শেয়ার কেনার আহ্বান কি তাহলে বড় বিনিয়োগকারীদের জন্য এক ধরনের 'সিগন্যাল' ছিল?

ট্রুথ সোশালে পোস্ট দেওয়ার পরপরই ট্রাম্প বৈঠকে বসেন ওভাল অফিসে। উপস্থিত ছিলেন মাইক বসেন্ট, হাওয়ার্ড লাটনিক এবং ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের পরিচালক কেভিন হ্যাসেট। বৈঠকে তাঁরা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ১০ বছরের ট্রেজারি বন্ডের সুদহার নিয়ে আলোচনা করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ জানান।

এই আলোচনায় ট্রাম্প বিশেষ মনোযোগ দেন। কারণ, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় তার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা তাঁকে বুঝিয়ে দিয়েছে—বন্ডের সুদহার বেড়ে গেলে ব্যাংকিং খাতে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

নতুন শুল্ক ঘোষণার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি বন্ড ও ডলারের বাজারে ব্যাপক ধস নামে। অথচ সাধারণত এ ধরনের সম্পদগুলোকেই বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ সময়ে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন।

শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্তের পর ওয়াল স্ট্রিটের অর্থনীতিবিদেরা দ্রুত মূল্যস্ফীতি বাড়ার পূর্বাভাস দেন এবং প্রবৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেন। একাধিক বিশ্লেষক রীতিমতো মন্দার হুমকিও উচ্চারণ করেন। কয়েক দিনের মধ্যেই শেয়ারবাজার থেকে উবে যায় ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদমূল্য।

অবশেষে বুধবার দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে ট্রুথ সোশালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা দেন—তিনি 'রেসিপ্রোকাল' শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করছেন। তবে চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করা হবে। অধিকাংশ দেশের জন্য ১০ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকবে।

উপদেষ্টারা কয়েক দিন ধরেই প্রেসিডেন্টকে এমন একটি 'মধ্যপন্থী' নীতির পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন। ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত সেই দিকেই হাঁটলেন।

শুল্ক নীতিতে হঠাৎ এই মোড় ঘোরানোর পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মাইক বসেন্ট ও হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি কারিন লেভিট। তাঁরা দাবি করেন—এই সিদ্ধান্ত কোনো হঠাৎ পরিবর্তন নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত কৌশলের ফল। তাঁদের মতে, এর লক্ষ্য ছিল চীনকে আমেরিকান শ্রমিকদের কষ্টের মূল উৎস হিসেবে আলাদা করে চিহ্নিত করা।

বসেন্ট বলেন, 'প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাই তো শুরু থেকেই ছিল।'

প্রেস সেক্রেটারি লেভিট নীতিগত এই ইউ-টার্নকে 'আর্ট অব দ্য ডিল' বলে উল্লেখ করেন। 'আপনারা অনেকেই ট্রাম্পের কৌশল বুঝতে পারেননি,' বলেন লেভিট। 'আপনারা বলেছিলেন, বাকি দুনিয়া চীনের দিকে ঝুঁকবে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে উল্টো। আজ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলতে চাইছে পুরো বিশ্ব, কারণ তারা আমাদের বাজার, আমাদের ভোক্তা, আর এই প্রেসিডেন্টকে দরকার—এ কারণেই ৭৫টির বেশি দেশ এখন হোয়াইট হাউজে যোগাযোগ করছে।'

ট্রাম্পের সিনিয়র উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার এক ধাপ এগিয়ে এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লেখেন: 'আপনারা আমেরিকার ইতিহাসে কোনো প্রেসিডেন্টের সবচেয়ে কৌশলী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রত্যক্ষ করলেন।'

বসেন্ট আরও বলেন, ৯০ দিনের বিরতির সিদ্ধান্ত একান্তভাবেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নিজের। তার দাবি, শেয়ারবাজারে ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতির সঙ্গে এই সিদ্ধান্তের কোনো সম্পর্ক নেই।

'আমার কাছে এমন কিছু নেই যা বলে যে সিদ্ধান্তটি সেই কারণে নেওয়া হয়েছে। বরং আজ আমাদের ১০ বছরের ট্রেজারি বন্ডের নিলাম বেশ ভালোই হয়েছে,' বলেন বসেন্ট।

তার ব্যাখ্যা, ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে এখন বহু দেশ থেকে আলোচনার অনুরোধ আসছে। এসব আলোচনা হবে আলাদাভাবে এবং প্রতিটির জন্য সময় প্রয়োজন হবে বলেই সাময়িক বিরতি দেওয়া হয়েছে।

তবে এত ঘন ঘন নীতিপাল্টায় বিনিয়োগকারীরা আদৌ ট্রাম্পের কথায় আস্থা রাখবেন কি না—এই প্রশ্ন এড়িয়ে যান ট্রেজারি সেক্রেটারি।

ট্রাম্পের ঘোষিত বিরতির সময়সীমা মাত্র ৯০ দিন। অতিরিক্ত কোনো পণ্যের ওপর শুল্ক ছাড় দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানাননি প্রেসিডেন্ট। বরং বুধবার প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'এটা আসলে এক ধরনের প্রবৃত্তির ব্যাপার। আপনি কাগজে-কলমে হিসাব কষে এটা করতে পারবেন না। এটা আসলে অনেকটা অনুভবের বিষয়।'


অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন

Related Topics

টপ নিউজ

ডোনাল্ড ট্রাম্প / শুল্ক / শুল্ক আরোপ / বাণিজ্য যুদ্ধ

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের সম্পত্তি জব্দ করেছে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি
  • ‘পুলিশ যেতে ভয় পেয়েছে’: মুজিবের বাড়ি ভাঙার সময় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার প্রশ্নে ইউনূস
  • দিল্লিতে দাবা টুর্নামেন্ট: রানী হামিদের সঙ্গীকে ঢুকতে দেয়নি ভারত, ঘটনায় ‘বিপর্যস্ত’ ৮০ বছর বয়সি এ দাবাড়ু
  • নেটিজেনদের সমালোচনার মুখে স্টারমার সম্পর্কে প্রেস সচিবের বক্তব্য
  • পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের অংশ হওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই: ড. ইউনূস
  • মায়ের মৃত্যুতে প্যারোলে মুক্তি পেলেন সাংবাদিক দম্পতি ফারজানা রুপা-শাকিল আহমেদ

Related News

  • ইরানের বাড়তি পারমাণবিক উপাদান সরিয়ে নিতে প্রস্তুত রাশিয়া
  • ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী অভিযান: লস অ্যাঞ্জেলেসে কারফিউ জারি
  • অপ্রস্তুত ন্যাশনাল গার্ড: প্রকাশ পেল সৈন্যদের মেঝেতে শুয়ে থাকার দৃশ্য!
  • ‘ন্যাশনাল গার্ড’ মোতায়েন ইস্যুতে মামলা করায় ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নরকে গ্রেপ্তার করা উচিত: ট্রাম্প
  • লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসনবিরোধী অভিযান: আরও ২০০০ ন্যাশনাল গার্ড, ৭০০ মেরিন পাঠালেন ট্রাম্প

Most Read

1
বাংলাদেশ

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের সম্পত্তি জব্দ করেছে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি

2
বাংলাদেশ

‘পুলিশ যেতে ভয় পেয়েছে’: মুজিবের বাড়ি ভাঙার সময় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার প্রশ্নে ইউনূস

3
খেলা

দিল্লিতে দাবা টুর্নামেন্ট: রানী হামিদের সঙ্গীকে ঢুকতে দেয়নি ভারত, ঘটনায় ‘বিপর্যস্ত’ ৮০ বছর বয়সি এ দাবাড়ু

4
বাংলাদেশ

নেটিজেনদের সমালোচনার মুখে স্টারমার সম্পর্কে প্রেস সচিবের বক্তব্য

5
বাংলাদেশ

পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের অংশ হওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই: ড. ইউনূস

6
বাংলাদেশ

মায়ের মৃত্যুতে প্যারোলে মুক্তি পেলেন সাংবাদিক দম্পতি ফারজানা রুপা-শাকিল আহমেদ

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net