ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি পুনরায় চালুর প্রস্তাবকে তারা সমর্থন করছে। মধ্যস্থতাকারীদের দেওয়া এই প্রস্তাবের আওতায় ইসরায়েলের কাছে পাঁচজন বন্দিকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে, যার বিনিময়ে ৫০ দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।
গাজার বাইরে অবস্থানরত হামাসের শীর্ষ নেতা খালিল আল-হাইয়া জানিয়েছেন, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের পাঠানো খসড়া চুক্তিতে হামাস সম্মতি দিয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, তারা প্রস্তাবটি পেয়েছে এবং 'যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পূর্ণ সমন্বয়ের মাধ্যমে মধ্যস্থতাকারীদের কাছে পাল্টা প্রস্তাব জমা দিয়েছে'।
সম্মতি দেওয়া হলে নতুন এই সীমিত যুদ্ধবিরতি রোববারের ঈদুল ফিতরের সঙ্গে মিলে যেতে পারে।
শনিবার নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, তিনি মধ্যস্থতাকারীদের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে ইসরায়েলের পাল্টা প্রস্তাব সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রও এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি।
এরই মধ্যে, প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি চলতি মাসের শুরুর দিকে শেষ হওয়ার পর ইসরায়েলি বাহিনী রাফায় স্থল অভিযান চালিয়েছে এবং গাজায় বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে। প্রথম যুদ্ধবিরতির পর দুই পক্ষই চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে একমত হতে ব্যর্থ হয়।
প্রথম ধাপে হামাস ৩৩ জন বন্দিকে মুক্তি দিয়েছিল। ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠী এখনো ৫৯ জনকে বন্দি করে রেখেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এদের সবাই বেঁচে আছেন কি না, তা নিশ্চিত নয়।
হামাস আগের চুক্তিতেই অটল ছিল, যেখানে দ্বিতীয় ধাপে আলোচনার মাধ্যমে সব বন্দির মুক্তির বিনিময়ে গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার ও যুদ্ধের অবসান চাওয়া হয়েছিল। তবে সেই আলোচনা শুরু হয়নি।
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি, যা এক মাস আগে শেষ হয়েছিল, সেটি বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে যুদ্ধ বন্ধের কোনো নিশ্চয়তা দেয়নি।
ইসরায়েল হামাসকে যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের জন্য দায়ী করে এবং ১৮ মার্চ থেকে গাজায় সামরিক হামলা আবার শুরু করে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, তখন থেকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় ৯০০-র বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
আটক ব্যক্তিদের স্বজনরা নেতানিয়াহুকে যুদ্ধবিরতি ভেঙে তাদের প্রিয়জনদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলার দায়ে অভিযুক্ত করেছেন।
হামাস প্রকাশিত এক নতুন ভিডিওতে বন্দিদের একজন, এলকানা বোহবত, মুক্তির জন্য অনুরোধ জানান।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রায় ১,২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যায়। এর জবাবে ইসরায়েল ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে, যাতে গাজায় ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।