গ্রেপ্তার হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক–ইওল

দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির তদন্তকারী সংস্থা। দেশে সামরিক আইন জারির ব্যর্থ চেষ্টার মাত্র ৬ সপ্তাহের মধ্যে গ্রেপ্তার হলেন ইউন।
প্রেসিডেন্ট ইউনের অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্তকারীরা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, 'যৌথ তদন্ত সদরদপ্তর আজ (১৫ জানুয়ারি) সকাল ১০টা ৩৩ মিনিটে (স্থানীয় সময়) প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের জন্য জারিকৃত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করেছে।'
এর আগে, স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইয়োনহ্যাপের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, অভিশংসিত প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার তদন্তকারীরা বুধবার প্রেসিডেন্টের আবাসিক কম্পাউন্ডে প্রবেশ করে। এ সময় মই ব্যবহার করে তাদেরকে ভেতরে ঢুকতে হয়েছে বলে জানানো হয়।
এর আগে, প্রাথমিকভাবে প্রেসিডেন্সিয়াল সিকিউরিটি সার্ভিস তদন্তকারীদের ভেতরে যেতে বাধা দেয়। তদন্তকারীদের যানবাহন যাতে ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য প্রবেশপথে ব্যারিকেড দেয় প্রেসিডেন্সিয়াল সিকিউরিটি সার্ভিস। একইসঙ্গে সেখানে অভিশংসিত প্রেসিডেন্টের পক্ষে রক্ষণশীল পিপল পাওয়ার পার্টির কয়েকজন আইনপ্রণেতা এবং ইউনের আইনজীবীদের একটি দল উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছে ইয়োনহ্যাপ।
গত ৩ ডিসেম্বর রাতে আকস্মিকভাবে সামরিক আইন জারি করে দেশবাসীকে চমকে দেন দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। এশিয়ার এই গণতান্ত্রিক দেশে প্রায় ৫০ বছরের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা সেদিনই প্রথমবারের মতো ঘটে।
এক টেলিভিশন ভাষণে প্রেসিডেন্ট জানান, 'রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি' এবং উত্তর কোরিয়ার হুমকির কারণে তিনি এই কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যায়, এ সিদ্ধান্ত বাইরের কোনো হুমকির কারণে নয়; বরং তার নিজস্ব রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলার চেষ্টা।
সামরিক আইন জারির পরপরই হাজারো মানুষ সিউলের পার্লামেন্ট ভবনের সামনে বিক্ষোভে নামেন। এ সময় বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা দ্রুত পার্লামেন্টে জরুরি অধিবেশনে মিলিত হয়ে সামরিক আইন প্রত্যাহারের প্রস্তাব পাস করেন।
বিরোধীদের এই উদ্যোগে পরাজিত হয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ইউন পার্লামেন্টের সিদ্ধান্ত মেনে নেন এবং সামরিক আইন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ ডিসেম্বর পার্লামেন্টের ভোট অভিশংসিত হন ইউন সুক ইওল।
দক্ষিণ কোরিয়ায় তিনিই দ্বিতীয় রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট, যিনি অভিশংসনের মুখোমুখি হন। এর আগে, ২০১৭ সালে পার্ক গিউন-হাই অভিশংসিত হয়ে পদ থেকে অপসারিত হয়েছিলেন।