চলতি বছরে মহাকাশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করতে পারে রাশিয়া, মিত্রদের জানাল আমেরিকা

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেশটির মিত্রদের জানানো হয়েছে, চলতি বছরেই মহাকাশে পারমাণবিক অস্ত্র অথবা এর পরীক্ষামূলক ওয়ারহেড মোতায়েন করতে পারে রাশিয়া। দেশটির প্রভাবশালী গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ নিউজ এবিষয়ে সংশ্লিষ্টদের বরাতে জেনেছে।
নাম না প্রকাশের শর্তে তাঁরা বলেন, পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে মহাকাশে স্যাটেলাইট ঘায়েল করার সক্ষমতা তৈরি করছে রাশিয়া। কিন্তু, মহাকাশে পারমাণবিক ওয়ারহেড মোতায়েন করা হলে তা ১৯৬৭ সালের আউটার স্পেস চুক্তি লঙ্ঘন করবে। রাশিয়াও এই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের হাউজ ইন্টেলিজেন্স কমিটির চেয়ারম্যান মাইক টার্নার গত সপ্তাহে রাশিয়ার পক্ষ থেকে আসা জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির বিষয়ে সতর্ক করেন। তবে এসময় কী ধরনের হুমকি তা তিনি স্পষ্ট করে জানাননি। এরপরে প্রেসিডেন্ট বাইডেন জানান, ক্রেমলিন একটি স্যাটেলাইট-বিধবংসী অস্ত্র তৈরি করছে, তবে এই অস্ত্রের দ্বারা সরাসরি মানুষের জীবনহানির কোনো শঙ্কা নেই।
এই প্রেক্ষাপটে, এবার মিত্র দেশগুলোকে সতর্ক করলো ওয়াশিংটন।
এবিষয়ে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্ররা ব্লুমবার্গের কাছে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
এদিকে মঙ্গলবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর সাথে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি বৈঠক করেন, যা টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়। সেখানে পুতিন বলেন, "আমরা সবসময়েই মহাকাশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের বিরুদ্ধে ছিলাম, আর এখনও আছি। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ মহাকাশে যেসব কাজ করছে, আমরাও তেমনটাই করছি।"
রাশিয়া স্বীকার না করলেও, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহাকাশে মোতায়েনের জন্য পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের মধ্যে পৃথিবীর কক্ষপথে আক্রমণ সক্ষমতা তৈরির প্রতিযোগিতা তুলে ধরছে। এদিক দিয়ে স্নায়ুযুদ্ধের সময়ের চেয়ে ভিন্ন এবারের মহাকাশ প্রতিযোগিতা বা স্পেস রেস, যখন মাত্র দুটি পরাশক্তি এতে জড়িয়ে পড়েছিল। তবে পরে তারা মহাকাশের সামরিকায়ন বন্ধে নিজেদের মধ্যে একাধিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি করে।
ব্লুমবার্গকে সংশ্লিষ্ট মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, তাঁদের বর্তমান পর্যালোচনা হচ্ছে রাশিয়া কক্ষপথে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা করছে না। তবে দুর্ঘটনাবশত এমনটা ঘটতে পারে, আর তাহলে কক্ষপথে আবর্তন করা এক-তৃতীয়াংশ স্যাটেলাইট ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই ঘটনায় বিপর্যস্ত হতে পারে পৃথিবীর যোগাযোগ ব্যবস্থা।
জাতিসংঘের মহাকাশ বিষয়ক সংস্থার তথ্যমতে, বর্তমানে পৃথিবীর কক্ষপথে রয়েছে ৭ হাজার ৮০০ স্যাটেলাইট।
অনুবাদ: নূর মাজিদ