আন্দোলনের জেরে এনবিআরের আরও ৯ কর্মকর্তা বরখাস্ত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাম্প্রতিক আন্দোলনের সময় 'দাপ্তরিক দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টির' অভিযোগে আরও ৯ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
আজ (১৮ আগস্ট) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান স্বাক্ষরিত পৃথক ৯টি আদেশে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৩৯(১) ধারা অনুযায়ী এই বরখাস্তের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
সাময়িকভাবে বরখাস্তকৃত কর্মকর্তারা হলেন, মোংলা কাস্টমস হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার আআম আমীমুল ইহসান খান, সিলেটের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু, চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমির যুগ্ম কমিশনার সানোয়ারুল কবির, খুলনার কাস্টমস, এক্সাইজ, ভ্যাট কমিশনারেটের উপকমিশনার সাইদুল ইসলাম, ফরিদপুর কর অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার মেসবাহ উদ্দিন খান, এনবিআরের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) চাঁদ সুলতানা চৌধুরানী, দিনাজপুরের যুগ্ম কর কমিশনার মামুন মিয়া, আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের অতিরিক্ত কর কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকা ও এবং ঢাকা কর অঞ্চল-৭ এর অতিরিক্ত কর কমিশনার সুলতানা হাবীব। এদের মধ্যে সেহেলা সিদ্দিকা এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের মহাসচিব ছিলেন।
এর আগে একই অভিযোগে আরও ১৪ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত এবং চারজনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।
আদেশে বলা হয়েছে, গত ১২ মে সরকার কর্তৃক 'রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ' জারির পর কাস্টমস, এক্সাইজ, ভ্যাট এবং আয়কর বিভাগের কিছু কর্মকর্তা বিক্ষোভ করে সহকর্মীদের দাপ্তরিক দায়িত্ব পালনে বাধা দেন।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, কাজ বর্জন করে এবং অন্যদের এনবিআর সদর দপ্তরে জড়ো হতে বাধ্য করার মাধ্যমে এই আন্দোলন দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমকে ব্যাহত করেছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮–এর ধারা-৩৯ (১) অনুযায়ী তাদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করে চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
সাময়িক বরখাস্তকৃতরা বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন। সাময়িক বরখাস্তের আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ মে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা—এই দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশ জারি হয়। এর পর থেকে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে যৌক্তিক সংস্কারে দাবিতে প্রায় দেড় মাস আন্দোলন করেন। ২৮ ও ২৯ জুন সারাদেশে কাজ বন্ধ করে দেন তারা। এরপর ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করেন তারা। এরপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়।