মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনকে কাঠগড়ায় দেখে কাঁদলেন স্ত্রী আসফিয়া

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আসাদুল হক বাবু হত্যার ঘটনায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাই টিভির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির উদ্দিন সাথীকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ড শুনানির আগে তাকে কাঠগড়ায় দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার স্ত্রী আসফিয়া উদ্দিন।
সোমবার (১৮ আগস্ট) নাসির উদ্দিনকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক খান মো. এরফান।
আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নাসির উদ্দিনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। বেলা ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে এজলাসে তোলা হয়।
এজলাসে তোলার সময় নাসির উদ্দিনকে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট, হাতে হাতকড়া ও মাথায় হেলমেট পড়ানো হয়। এ সময় আদালতের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন আসফিয়া উদ্দিন। নাসির উদ্দিনকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। এ সময় তার অন্যান্য স্বজনদেরও কাঁদতে দেখা যায়।
আদালতে নাসির উদ্দিনকে আসামির কাঠগড়ায় রাখা হয়। এ সময় আসফিয়া উদ্দিন আদালতের ভেতর বেঞ্চে বসা ছিলেন। স্বামীর দিকে তাকিয়ে তখনো কাঁদছিলেন তিনি।
এরপর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়া উদ্দিন আহমেদ আদালতের এজলাসে ওঠেন।
বাদীপক্ষে মোছা. হাবিবা রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, এ আসামি আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের মতো মিডিয়া সন্ত্রাস। প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনার সঙ্গে যোগসাজশে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তার সর্বোচ্চ রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।
এরপর আসামিপক্ষে মোছা. ফারজানা আক্তার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, 'মামলার বাদী যে হলফনামা দিয়েছেন, তাতে এ আসামিসহ তিনজনের নাম দেওয়ার বিষয় তার নলেজে ছিল না। তথ্যগত ভুলের কারণে নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এজাহারে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নাই। তিনি ছাত্র আন্দোলনের স্বপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। তার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের প্রার্থনা করছি।
এদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী শামসুদ্দোহা সুমন রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানির একপর্যায়ে বিএনপিপন্থী দুই আইনজীবীরা তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ অবস্থায় শুনানি শেষ হয়। পরে আদালত নাসির উদ্দিনের ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়ে এজলাস ত্যাগ করেন। এরপরও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের দুই পক্ষ কিছু সময় তর্ক চালিয়ে যান।
শুনানির পুরো সময় আসফিয়া উদ্দিন আদালতে বসে কাঁদতে থাকেন। তবে হাস্যোজ্জল ছিলেন নাসির উদ্দিন। তিনি স্ত্রীসহ অন্য স্বজনদের সান্ত্বনা দেন।
এর আগে, গত রোববার গুলশান থেকে নাসির উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।