ক্যাম্পা কোলা বাজারে ফিরতেই ২০০ মিলির বোতলের দাম ৫ রুপি কমাল কোকা-কোলা

ভারতের ৫০ বছরের পুরোনো আইকনিক পানীয় ব্র্যান্ড ক্যাম্পা কোলা ফের বাজারে নিয়ে এসেছে রিলায়েন্স শিল্পগ্রুপ। ক্যাম্পা কোলা বাজারে ফিরতেই দেশটির প্রধান রাজ্যগুলোতে ২০০ মিলিলিটারের (মিলি) বোতলের দাম কমিয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী ব্র্যান্ড কোকা-কোলা। খবর ডেকান হেরাল্ড-এর।
ভারতে যখন গরম চড়ছে, কোমল পানীয়ের চাহিদা বাড়ছে, সেই সময় দাম কমাল কোকা-কোলা।
ডিস্ট্রিবিউটররা ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছেন, তেলেঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে আগে ২০০ মিলির কোকা-কোলার বোতল বিক্রি হতো ১৫ রুপিতে। এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ১০ রুপিতে।
ক্যাম্পা কোলাও বাজারে প্রবেশ করেছে ২০০ মিলির পলিইথিলিন টেরেফথ্যালেট (পিইটি)। এর দামও ধরা হয়েছে ১০ রুপি।
একজন ডিস্ট্রিবিউটর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, তার ব্যবসায় কাচের বোতলের অবদান ৭-৮ শতাংশ, তবে তাকে এখন এটি ৫০ শতাংশে উন্নীত করতে বলা হয়েছে।
গত বছর ক্যাম্পা কোলার অধিগ্রহণ করে মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স। কোম্পানিটি তাদের ইউনিট প্রাইস কোকা-কোলার ও পেপসির মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে কম রাখছে। যেমন, ২.২৫ লিটারের কোক ও পেপসি পিইটি বোতলের দাম যেখান ৯৯ রুপি, সেখানে ক্যাম্পা কোলার ২ লিটারের বোতলের দাম ৮০ রুপি।
সম্প্রতি রিলায়েন্স ভারতজুড়ে ক্যাম্পা কোলা সরবরাহ শুরু করেছে। শুরুটা করেছে অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানা থেকে। দক্ষিণ ভারতে রিলায়েন্সের সরবরাহ চেইন শক্তিশালী হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত।
আসন্ন আইপিএল মৌসুমে ক্যাম্পা কোলার ব্যাপক প্রচারণা চালানো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ১৯৫০-এর দশকে ভারতের বাজারে প্রবেশ করে কোকা-কোলা। ১৯৭০-এর দশক পর্যন্ত কোকা-কোলা সবচেয়ে জনপ্রিয় কোমল পানীয় ছিল দেশটিতে।
তবে ১৯৭৭ সালে ভারত সরকারের নীতি বদলায়। ফলে ভারতে ব্যবসা করতে হলে কোকা-কোলাকে তাদের 'গোপন ফর্মুলা' প্রকাশ করতে হতো। কিন্তু এতে রাজি না হয়ে বরং ব্র্যান্ডটি ভারত থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেয়।
এরপরই কোকা-কোলার শূন্যস্থানের দখল নেয় ক্যাম্পা কোলা। অল্প সময়েই ভারতজুড়ে তরুণদের মাঝে কোমল পানীয়টি তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
অভিনব বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেও পানীয়টি বাজারে সুপরিচিত হয়ে ওঠে। ১৯৮৩ সালে ওই সময়ের তরুণ তারকা হিসেবে সালমান খানকে ক্যাম্পা কোলার বিজ্ঞাপনে দেখা যায়।
তবে ১৯৯০-এর দশকে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী মনমোহন সিং ভারতে মুক্তবাজার অর্থনীতির আওতায় বৈদেশিক কোম্পানিগুলোকে অবাধে ব্যবসা করার অনুমতি দেন। এর ফলে কোকা-কোলা ভারতের বাজারে ফের প্রবেশের সুযোগ পেয়ে যায়। একইসঙ্গে বাজারে আসে পেপসির মতো বহুজাতিক আরও কিছু কোমল পানীয়ের ব্র্যান্ড। শেষ পর্যন্ত এসব বিখ্যাত ব্র্যান্ডগুলোর বিপণন কৌশলের কাছে টিকতে পারেনি ক্যাম্পা কোলা। ফলে ধীরে ধীরে ২০০০-এর দশকে ব্র্যান্ডটি কোমল পানীয় উৎপাদন বন্ধ করে দেয়।