গ্রীষ্মের পর ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় জয়ের দ্বারপ্রান্তে রাশিয়া

সোলেদার শহরটি বাখমুতের ঠিক উত্তরে অবস্থিত, যেখানে ইউক্রেন কিছু ভয়াবহ লড়াই সত্ত্বেও শক্তিশালী অবস্থান ধরে রেখেছে।
গত কয়েকদিনে সোলেদারের ইউক্রেনীয় সৈন্যরা রাশিয়ান ভাড়াটে কোম্পানি ওয়াগনার গ্রুপের একটি জোরালো আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ে তুলেছিল এবং সোমবার শহরের প্রশাসনিক কেন্দ্রে ভয়াবহ লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে।
ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার একটি গোয়েন্দা আপডেটে বলেছে যে, সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাশিয়ান এবং ওয়াগনার বাহিনী চার দিনের অগ্রগতির পর এখন সোলেদারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

কিয়েভ ইন্ডিপেন্ডেন্টের সূত্র অনুযায়ী, ইউক্রেনের উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হান্না মালিয়ার মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানান যে, সোলেদারে এখনও লড়াই চলছে, যা রাশিয়ার গোলাবর্ষণে ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও স্বীকার করেছেন যে, সোলেদারে যুদ্ধ করা তার সৈন্যদের জন্য একটি 'কঠিন এবং শক্ত যুদ্ধ' ছিল: "এটা অত্যন্ত কঠিন ছিল, কোথাও দেয়ালের পুরো অংশ অবশিষ্ট নেই।"
"এবং রাশিয়া সেখানে কী লাভ করতে চেয়েছিল? সবকিছু সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে, সেখানে কেউ বেঁচে নেই। তাদের হাজার হাজার সৈন্যের প্রাণ নষ্ট হয়েছে। সোলেদারের আশেপাশে পুরো এলাকা দখলদারদের মৃতদেহ এবং তাদের আক্রমণের চিহ্ন দিয়ে ঢেকে গেছে।"
রাশিয়ান সামরিক ব্লগার রাইবারও মঙ্গলবার একটি টেলিগ্রাম পোস্টে জানিয়েছেন যে, রাশিয়ান ওয়াগনার গ্রুপের বাহিনী সোলেদার শহরের কেন্দ্র মুক্ত করেছে এবং শত্রুদের উত্তর-পশ্চিম দিকে নিয়ে গেছে।
রাশিয়া ছয় মাইল দূরে অবস্থিত বাখমুতকে ঘিরে ফেলার প্রচেষ্টায় এবং ইউক্রেনের যোগাযোগের লাইন ব্যাহত করার জন্য সোলেদারকে ব্যবহার করতে পারে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দারা। বাখমুত দখল করতে পারলে ইউক্রেনের পূর্ব প্রদেশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রুশ বাহিনীর অগ্রসর হওয়া সহজ হবে।

ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া যুদ্ধের প্রথম দিকে রাশিয়া এই অঞ্চলের হাজার হাজার বর্গমাইল দখল করে নেয়, কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের কাছে বেশ কিছু এলাকা হারিয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্টের ট্র্যাকার অনুসারে রাশিয়া সর্বশেষ আগস্টে এলাকা দখল করে এগিয়ে যেতে পেরেছিল।
বাখমুতের কাছে হওয়া বেশিরভাগ যুদ্ধের নেতৃত্বে রয়েছে ওয়াগনার গ্রুপ, যারা হাজার হাজার রাশিয়ান বন্দিকে একেবারে ফ্রন্টলাইনে পাঠয়ে দিয়েছে। দ্য ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়্যার জানিয়েছে, যে এই মার্সেনারি বাহিনীই বাখমুতের আশেপাশে গুরুত্বপূর্ণ বসতিগুলোতে ধীরে ধীরে অগ্রসর হওয়ার জন্য দায়ী।
ইনিস্টিটিউটটি তাদের এক বিশ্লেষণে বলেছে যে, "ওয়াগনার গ্রুপের নেতা ইয়েভজেনি প্রিগোজিন সোলেদার এবং বাখমুতের আশেপাশে ওয়াগনার গ্রুপের নিশ্চিত সাফল্য এবং বানোয়াট সাফল্য উভয় ব্যবহারই চালিয়ে যাবেন। যাতে করে তিনি ওয়াগনার গ্রুপকে ইউক্রেনের বাস্তবিকভাবে সাফল্য আনতে পারা একমাত্র রুশ বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।"