অমিতাভ-রেখার মধ্যে প্রেম ছিল না, যা ছিল তা কেবল মোহ: প্রবীণ সাংবাদিক পূজা সামন্ত

অমিতাভ বচ্চন, জয়া বচ্চন ও রেখার ত্রিভূজ প্রেম কাহিনী বলিউডের ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত অধ্যায়। কয়েক দশক কেটে গেলেও এই সম্পর্ক নিয়ে চর্চা এবং 'যদি-হতো' বিতর্ক আজও থামেনি।
সম্প্রতি প্রবীণ সাংবাদিক পূজা সামন্ত ১৯৭০-এর দশকের সেই উত্তাল সময়ের স্মৃতিচারণ করেছেন। সেসময় এই তিনজনের নাম নিয়মিতই উঠে আসতো গসিপ কলামে।
'এটা প্রেম ছিল না, ছিল কেবল মোহ'- হিন্দি রাশ-এ এক আলাপচারিতায় পূজা সামন্ত এ মন্তব্য করেন।
তিনি জানান, অমিতাভ ও রেখার সম্পর্ক হয়তো সর্বসমক্ষে অতিরঞ্জিত হয়ে উঠেছিল।
তিনি বলেন, 'দুজনের মধ্যে কিছুটা মোহ জন্মেছিল, তবে আমি মনে করি না ওটা প্রেম ছিল, কারণ অমিতাভ তখন ইতোমধ্যে বিবাহিত।'
তিনি আরও জানান, রেখার সাহসী উপস্থিতি সেই সময়ে বিতর্ককে আরও উসকে দিত। যেমন- ঋষি কাপুর ও নীতু সিংয়ের বিয়েতে রেখা যখন সিঁদুর পরে উপস্থিত হন, তখন সেটি ছিল এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
পূজা বলেন, 'সেদিন কনে-বরের থেকেও বেশি মনোযোগ কেড়ে নিয়েছিলেন রেখা।'
তার মতে, অমিতাভকে প্রভাবিত করতে রেখা নাকি নিরামিষাশীও হয়েছিলেন।
নীরবতা, দূরত্ব, ও জয়ার 'নীরব বার্তা'
রেখার সাহসী উপস্থিতি আলোচনায় ঘি ঢাললেও, অমিতাভ ও জয়া সবসময় নীরবতাকে বেছে নিতেন।
পূজা জানান, 'আমি বহুবার অমিতাভের সাক্ষাৎকার নিয়েছি, কিন্তু তিনি কখনোই রেখাকে নিয়ে কিছু বলতেন না। বিষয়টি তিনি পুরোপুরি এড়িয়ে যেতেন। অন্যদিকে, জয়া কখনোই কোনো সাক্ষাৎকার দিতেন না।'
তবে জয়া একবার সরাসরি কিছু না বলেই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন।
পূজা স্মৃতিচারণ করেন, একবার জয়া রেখাকে ডিনারের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তাদের বাড়িতে। ডিনারের শেষে বিদায়ের সময়, জয়া এমন এক বার্তা দেন যা ছিল একেবারে স্পষ্ট।
পূজা বলেন, 'তিনি রেখাকে বুঝিয়ে দেন—তিনি মিসেস বচ্চন এবং যাই হোক না কেন, এই অবস্থান তারই থাকবে। সেটাই ছিল তার শেষ বার্তা। এরপর থেকে রেখা ও অমিতাভ আর একসঙ্গে কাজ করেননি।'
রেখার আত্মবিশ্বাস
এই তিনজনের মধ্যে একমাত্র রেখাই আজও মাঝে মাঝে এই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন তার স্বভাবসুলভ সোজাসাপ্টা ভাষা ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে।
দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কাপিল শো-তে তিনি তাদের ছবি সুহাগ-এর একটি নাচের দৃশ্যের স্মৃতিচারণ করেন।
একজন ভক্ত তাকে অমিতাভের সঙ্গে ডান্ডিয়া খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন করেন।
জবাবে রেখা মজার ছলে বলেন: 'ভাবুন, আমি যার সঙ্গে ডান্ডিয়া খেলছিলাম, তিনি কেমন মানুষ! আমি ভালো না খেলে আর কী করতাম? ডান্ডিয়া জানি কি না, সেটা বড় কথা না, ওই মানুষটার সামনে দাঁড়ালেই শরীর নিজে নিজেই নাচতে শুরু করত।'
আজও অমিতাভ-জয়া-রেখার গল্প শুধু গসিপ নয়, বরং এক আবেগঘন, সংযম ও নীরব ইঙ্গিতের অধ্যায় হিসেবে বলিউড ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে।