এনসিপি থেকে পদত্যাগ, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা তাসনিম জারার
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদ থেকে পদত্যাগ করে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৯ (খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদা) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন ডা. তাসনিম জারা।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় দলটির একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে নিজের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি। সেখানে তিনি লেখেন, 'প্রিয় সহযোদ্ধাগণ আমি দল থেকে পদত্যাগ করেছি। গত দেড় বছরে আপনাদের থেকে অনেক কিছু শিখেছি। সেজন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।'
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব মুশফিক উস সালেহীন তাসনিম জারার পদত্যাগের বিষয়টি টিবিএসকে নিশ্চিত করে বলেন, 'তাসনিম জারা এসসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের কাছে আজ সন্ধায় পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।'
এদিকে এদিন সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি বলেন, 'আমার স্বপ্ন ছিল একটি রাজনৈতিক দলের প্ল্যাটফর্ম থেকে সংসদে গিয়ে আমার এলাকার মানুষের ও দেশের সেবা করা। তবে বাস্তবিক প্রেক্ষাপটের কারণে আমি কোনো নির্দিষ্ট দল বা জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
রাজনীতিতে নিজের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করে পোস্টে তিনি আরও বলেন, 'আমি আপনাদের এবং দেশের মানুষকে ওয়াদা করেছিলাম যে আপনাদের জন্য ও নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ার জন্য আমি লড়ব। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, আমি আমার সেই ওয়াদা রক্ষা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাই এই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ঢাকা-৯ থেকে অংশগ্রহণ করব।'
দলীয় সমর্থনের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করার চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে ডা. তাসনিম জারা লেখেন, 'একটা দলের প্রার্থী হলে সেই দলের স্থানীয় অফিস থাকে, সুসংগঠিত কর্মী বাহিনী থাকে। সরকার ও প্রশাসনের সাথে নিরাপত্তা বা অন্যান্য বিষয়ে আপত্তি ও শঙ্কা নিয়ে কথা বলার সুযোগ থাকে। তবে আমি যেহেতু কোনো দলের সাথে থাকছি না, তাই আমার সে সব কিছুই থাকবে না।'
জনগণের ওপর আস্থা প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'আমার একমাত্র ভরসা আপনারা। আপনাদের মেয়ে হিসেবে আমার সততা, নিষ্ঠা, এবং নতুন রাজনীতি করার অদম্য ইচ্ছাশক্তির প্রেক্ষিতে আপনারা যদি স্নেহ ও সমর্থন দেন, তবেই আমি আপনাদের সেবা করার সুযোগ পাব।'
নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তিনি দুটি বিষয় স্পষ্ট করেছেন পোস্টে:
আইনি বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে ঢাকা-৯ আসনের ৪ হাজার ৬৯৩ জন ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, 'আগামীকাল এই স্বাক্ষর সংগ্রহের কাজ শুরু করব। মাত্র এক দিনে এত মানুষের স্বাক্ষর গোছানো প্রায় অসম্ভব একটি কাজ। আপনাদের স্বতঃস্ফূর্ত সাহায্য ছাড়া এটা করতে পারব না। এই কাজে যারা আগামীকাল বসার জায়গা দিয়ে বা স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে সাহায্য করতে চান, তারা অনুগ্রহ করে এই গ্রুপে যুক্ত হন। আপনাদেরকে নির্দিষ্ট স্থান ও লোকেশন জানিয়ে দেওয়া হবে: https://www.facebook.com/share/g/1DCkLvMvRX/'
স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্তের কারণে আগের ডোনেশন ফেরত দেওয়ার সুযোগ রেখে তিনি বলেন, 'কিছুদিন আগে নির্বাচনী ফান্ডরেইজিংয়ের সময় আপনারা অনেকে ডোনেট করেছেন। আমার এই পরিবর্তিত সিদ্ধান্তের কারণে যারা ডোনেট করা অর্থ ফেরত পেতে চান, তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা। যারা বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়েছেন তারা অর্থ ফেরত পেতে নিচে দেওয়া এই ফর্মটি পূরণ করুন: https://forms.gle/NKTkkNVZvUvyrsGYA আপনাদের ট্রাঞ্জাকশন আইডি ও ডিটেইলস ভেরিফাই করার পরে অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। আর যারা ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠিয়েছিলেন, তাদেরকে শীঘ্রই জানাব কী প্রক্রিয়ায় আপনাদের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে।'
