এবার জোটের পক্ষে নাহিদ ইসলামকে চিঠি দিলেন এনসিপির ৮০ নেতা
জামায়াতের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সম্ভাব্য জোটের বিরোধিতা করে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে ৩০ জন নেতার স্মারকলিপি দেওয়ার পর, এবার জোটের পক্ষে চিঠি দিয়েছেন দলের ৮০ জন নেতা।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন এনসিপির সদস্য ইয়াহিয়া জিসান। তিনি বলেন, "দলের অবস্থানকে সুসংহত করা এবং সাংগঠনিক সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাতেই আমরা এই চিঠি দিয়েছি।"
চিঠিতে বলা হয়, স্বাক্ষরকারীরা এনসিপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে দলের আদর্শ, লক্ষ্য ও ভবিষ্যৎ কৌশলগত অবস্থান সমুন্নত রাখার স্বার্থে তাদের মতামত তুলে ধরছেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনর্গঠন, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার টেকসই করা এবং একটি জনমুখী ও দায়বদ্ধ রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য সময়োপযোগী ও কৌশলগত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ জরুরি বলে তারা মনে করেন।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, দলীয় স্বার্থ, জাতীয় স্বার্থ এবং গণতান্ত্রিক রূপান্তরের বৃহত্তর লক্ষ্যকে সামনে রেখে এনসিপি যদি কোনো রাজনৈতিক দল বা জোটের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা বা জোট গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়, সে ক্ষেত্রে স্বাক্ষরকারীদের পূর্ণ সমর্থন ও সম্মতি রয়েছে। নির্বাহী কাউন্সিলের সুপারিশের ভিত্তিতে আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের গৃহীত যেকোনো জোট বা নির্বাচনী সমঝোতা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের প্রতিও তারা সমর্থন ও আস্থা প্রকাশ করেন।
চিঠিতে বলা হয়, "আমরা বিশ্বাস করি, আপনার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার মাধ্যমে এনসিপি একটি সময়োপযোগী, গ্রহণযোগ্য ও ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্তে উপনীত হবে, যা দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করবে এবং জনগণের আস্থা আরও সুদৃঢ় করবে।" এ প্রেক্ষাপটে প্রয়োজনীয় ও যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রত্যাশাও জানানো হয়।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মাহমুদা আলম মিতু, আলী নাছের খান, তাহসীন রিয়াজ, মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া, মাহিন সরকার, আশিকিন আলম, সারোয়ার তুষার, এহতেশাম হক, কৈলাশ চন্দ্র রবিদাস, ডা. মো. আব্দুল আহাদ, মশিউর রহমান, সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া, আলাউদ্দীন মোহাম্মদ, আতিক মুজাহিদ, দিলশানা পারুল, মো. সোহেল রানা, মো. রফিকুল ইসলাম কনক, গোলাম মর্তুজা সেলিম, জয়নাল আবেদীন শিশির, আবু সাঈদ লিয়ন, ডা. মনিরুজ্জামান, আবু সাঈদ মুসা, মাহবুব আলম, ইয়াহিয়া জিসান, মো. আরফুল দরিয়া, মুফতি ইনজাম, ইফতেখারুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জিহান, হাফসা জাহান, রাসেল আহমেদ, জুবাইরুল আলম মানিক, আসাদুল ইসলাম মুকুল, মুফতি ইনজিমামুল ইসলাম, ইসমাইল হোসেন সিরাজী, তুহিন মাহমুদ, মশিউর আমিন শুভ, আজাদ আহমেদ পাটওয়ারী, তানজিল মাহমুদ, তৌহিদ হোসেন মজুমদার, হিফজুর রহমান বকুল, মুকুল আহমেদ, আরিফুর রহমান তুহিন, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, নাহি উদ্দীন তারেক, নফিউল ইসলাম ও প্রীতম সোহাগসহ আরও অনেকে।
এর আগে একই দিনে ৩০ জন এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম বরাবর 'জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দায়বদ্ধতা ও দলীয় মূল্যবোধের আলোকে সম্ভাব্য জোট বিষয়ে নীতিগত আপত্তি সংক্রান্ত' একটি স্মারকলিপি দেন। সেখানে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে রাজনৈতিক জোট বা আসন সমঝোতার সম্ভাবনার বিরোধিতা করে স্পষ্ট আপত্তি জানানো হয়। স্মারকলিপিতে বলা হয়, নীতিগত অবস্থানের ভিত্তিতেই কৌশল নির্ধারিত হওয়া উচিত, কৌশলগত কারণে নীতিগত অবস্থান বিসর্জন দেওয়া সমীচীন নয়।
এদিকে গতকাল রাতে এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিনি ঢাকা-৯ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
