হাদিকে হত্যাচেষ্টা: প্রধান অভিযুক্ত ফয়সালের বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদীকে গুলির ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদের বাবা ও মাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে র্যাবের এক কর্মকর্তা তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন— ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির (৭০) এবং মা মোসাম্মৎ হাসি বেগম (৬০)।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টায় র্যাব-১০ এর একটি চৌকস অভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন হাসনাবাদ হাউজিং বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ওরফে শুটার ফয়সালের বাবা ও মাকে গ্রেপ্তার করে।'
প্রাথমিক তদন্তের বরাতে র্যাব জানিয়েছে, ফয়সাল ওই দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে তৃতীয়। তিনি প্রায়ই ঢাকার আগারগাঁওয়ে বড় বোন মোসাম্মৎ জেসমিন আক্তারের বাসায় যেতেন। হামলার দিনও ফয়সাল পশ্চিম আগারগাঁওয়ের কর্নেল রোডের পানির ট্যাংকি এলাকার ওই বাসায় যান।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, ঘটনার আগের রাতে ফয়সাল একটি কালো ব্যাগ নিয়ে বোনের বাসায় যান এবং পরে সেটি ভবনের পাশের একটি ফাঁকা জায়গায় ফেলে দেন। এরপর তিনি তার ১৮ বছর বয়সী ভাগনে জামিলকে ব্যাগটি এনে দিতে বলেন। এ সময় ফয়সাল তার দুটি মোবাইল ফোনের একটি ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দেন এবং অন্যটি মায়ের হাতে তুলে দেন।
সেখানে বাবা-মায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ফয়সাল আগারগাঁও ত্যাগ করেন। তিনি মিরপুর হয়ে শাহজাদপুরে যান এবং সেখানে বাবার ভাগনে আরিফের বাসায় অবস্থান নেন।
র্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির ব্যাগটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার ব্যবস্থা করেন এবং চালককে কিছু টাকা দেন। এরপর ফয়সালের বাবা-মা কেরানীগঞ্জে তাদের ছোট ছেলে হাসান মাহমুদ বাবুল ওরফে রাজের বাসায় চলে যান। সেখানে তারা যাত্রাবাড়ী থেকে কেনা দুটি নতুন মোবাইল সিম ব্যবহার করেন।
আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গ্রেপ্তার দম্পতিকে তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান র্যাবের ওই কর্মকর্তা।
এদিকে আলাদা একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানিয়েছে, ওসমান হাদীকে গুলির ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। নরসিংদী সদর থানার তারুয়া এলাকায় মোল্লা বাড়ির সামনের তারুয়া বিলের পানির ভেতর থেকে এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, একটি খেলনা পিস্তল এবং ৪১ রাউন্ড গুলি। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মো. ফয়সাল (২৫) নামের আরেক যুবককেও আটক করেছে র্যাব।
