চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা ছাত্রদলের
১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড নিয়ে 'বিতর্কিত' মন্তব্যের জেরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানের (একাডেমিক) পদত্যাগ দাবি করেছেন শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। সেইসঙ্গে দাবি আদায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালাও দিয়েছেন তারা।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১২ টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা দেন তারা।
এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দপ্তরে 'মুক্তচিন্তা, মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যা' শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান।
সে সময় তিনি বলেছিলেন, 'যে সময় আমি (পাকিস্তানি সেনাবাহিনী) দেশ থেকে পালানোর জন্য চেষ্টা করছি, আমি জীবিত থাকব না মৃত থাকব, সে বিষয়ে কোনো ফয়সালা হয়নি, সে সময় পাকিস্তানি যোদ্ধারা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে, আমি মনে করি যে রীতিমতো এটি অবান্তর কথা। এটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এদেশকে একটা দেশের রাজ্যে পরিণত করার জন্য বুদ্ধিজীবীদেরকে ষড়যন্ত্রমুলকভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা আজ পর্যন্ত জহির রায়হানকে খুঁজে পাচ্ছি না। যদি জহির রায়হানকে খুঁজে পাওয়া যেত, সত্যিকার ইতিহাস আমরা পেতাম যে কি হয়েছে।'
পরে এ বক্তব্য ছড়িয়ে পড়লে সবার মাঝে বিপরীত প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। গতকাল (১৪ ডিসেম্বর) রাতে ছাত্রদলসহ অন্যান্য রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলো এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ ছাত্রদল প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, 'উপ-উপাচার্য পদে থেকে যখন একজন মুক্তিযুদ্ধ ও বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে কটূক্তি করে, তখন তার এই পদে থাকার নীতি-নৈতিকতা থাকে না। তিনি মুক্তিযুদ্ধ ও বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে কটূক্তি করেছেন। যারা আমাদের মা-বোনেদের সম্মান নষ্ট ও পূর্বপুরুষদের হত্যা করেছে, তাদের পাকিস্তানি যোদ্ধা বলেছেন। পাকিস্তানী যোদ্ধা কারা? এর ব্যাখা তাকে দিতে হবে। আমাদের ছাত্র সমাজের দাবি একটাই, এই পদে থাকার যোগ্যতা তিনি (উপ-উপাচার্য) হারিয়েছেন। তাকে পদত্যাগ করতে হবে।'
