ক্ষমতায় গেলে, ২০০ আসনে বিজয়ী হলেও জাতীয় সরকার গঠন করবে জামায়াত: শফিকুর রহমান
ক্ষমতায় গেলে জামায়াতে ইসলামী জাতীয় সরকার গঠন করবে বলে জানিয়েছেন দলের আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ২০০ আসনে বিজয়ী হলেও তার দল দেশের স্বার্থে, স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে জাতীয় সরকার গঠন করবে।
আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠকে ইইউর পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান, সব মানুষের নিরাপত্তা এবং নির্বাচনী ইশতেহার ও নির্বাচন পরবর্তী ১০০ দিনের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় বলে জানান জামায়াত আমির। তিনি ইইউ প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করেন যে, জামায়াত নির্বাচিত হলে একটি 'ইনক্লুসিভ' [অন্তর্ভুক্তিমূলক] বাংলাদেশ গড়বে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, 'আমরা কোনো দলকেই বাদ দেব না। আমরা দেশের স্বার্থে দারুণভাবে অনুভব করি যে, অন্তত আগামী পাঁচটা বছর দেশের স্থিতিশীলতা, অর্থনীতি ফিরিয়ে আনা, আইনের শাসন কায়েম করা এবং সমাজ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করার জন্য আমাদের একটি জাতীয় সরকার প্রয়োজন। আমরা নির্বাচিত হলে সেই সরকারটাই গঠন করব।'
'২০০ আসনেও আমরা বিজয়ী হয়ে যাই, তারপরেও আমরা এটি করব ইনশাআল্লাহ', আরও উল্লেখ করেন তিনি।
জাতীয় সরকারে যারা অংশগ্রহণ করবেন, তাদের জন্য দুটি শর্তের কথা উল্লেখ করেন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, 'নাম্বার ওয়ান—কেউ নিজে দুর্নীতি করবেন না এবং দুর্নীতিকে কোনোভাবে প্রশ্রয় দেবেন না। নাম্বার টু—সকলের জন্য সমান বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং এ ব্যাপারে রাজনৈতিকভাবে কোনো হস্তক্ষেপ করা যাবে না। মিনিমাম এই দুইটা জিনিসের ব্যাপারে যারা একমত হবেন, তাদের নিয়ে আমরা সরকার গঠন করতে আগ্রহী।'
ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ও গণভোট (রেফারেন্ডাম) একই দিনে অনুষ্ঠানের বিষয়ে ইইউর প্রশ্নের জবাবে জামায়াত আমির বলেন, 'আমাদের দেশের মানুষ ততটা এখনও সচেতন না। তাই একই দিনে দুটি নির্বাচন হলে দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার এবং ভোটার উপস্থিতি (টার্নওভার) কম হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই কারণে আমরা বলেছি, দুটি নির্বাচন আলাদা হওয়া উচিত।'
নির্বাচন পেছানো প্রসঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, 'আমরা ইলেকশন পেছানোর কোনো সুযোগ আছে বলে মনে করি না। ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হওয়া দরকার।'
পিআর বা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতির বিষয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, 'পিআর আমাদের দাবি। আমরা এটা জনগণের জন্য করেছি, দলের জন্য নয়। এমনকি আমরা যদি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে দেশ সেবার সুযোগ পাই, তখনও পিআর বাস্তবায়নে আন্তরিকতার পরিচয় দেব। জেতার পর পিআর-এর দরকার নেই—অতীতের এই কালচার আমরা পাল্টে দিতে চাই।'
রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা ধর্মকে কখনও ব্যবহার করি নাই, করব না। ধর্ম আমাদের চিন্তার অঙ্গ, কলিজার অংশ। ধর্ম নিয়ে কাজ করি, ব্যবহার করি না; কারা করে সেটা আপনারা ভালো বোঝেন। যারা ইলেকশনের সময় টুপি পরেন, তসবিহ হাতে ঘোরেন—তারা হয়তো করেন। আমরা তসবিহ মুখে নিয়ে ঘুরি না, তসবিহ বুকে নিয়ে ঘুরি।'
