দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে জামায়াত সর্বপ্রথম দুর্নীতিমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করবে: এটিএম আজহারুল
জামায়াত ইসলামী দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে সর্বপ্রথম দুর্নীতিমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করবে বলে জানিয়েছেন দলটির নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, 'আমাদের সম্পদের অভাব নেই। আমাদের মূল সমস্যা হলো দুর্নীতি ও সৎ নেতৃত্বের অভাব। যারা দেশ চালিয়েছেন, তাদের মধ্যে সততা ছিল না। তারা নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত ছিলেন এবং দুর্নীতি করে দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছেন।
মঙ্গলবার বিকেলে ফরিদপুর শহরের ঐতিহাসিক অম্বিকা মেমোরিয়াল হল মাঠে ফরিদপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে গণসমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এটিএম আজহারুল বলেন, 'আমাদের দেশ গরিব নয়, সম্পদশালী দেশ। গত ৫৪ বছর আমার দেশকে গরিব করে রাখা হয়েছে।'
বাংলাদেশকে ভারত বন্ধু ভাবতে পারেনি জানিয়ে জামায়াত নেতা বলেন, 'গত ৫৪ বছর পরও ভারত বাংলাদেশকে বন্ধু ভাবতে পারেনি। তারা আমাদের শোষণ করেছে। আমরা ভৌগলিক স্বাধীনতা পেয়েছি, কিন্তু রাজনৈতিক স্বাধীনতা আমাদের ছিল না। আমরা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র কায়েম করব।'
তিনি আরও বলেন, '৫৪ বছর আগের বস্তা পঁচা কাহিনি নতুন করে নাটক সাজিয়ে আমাদের নেতাদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার সরকারের সময় আমাদের দুজন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। তারা এক টাকা আত্মসাৎ করেছেন এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারেনি। আমরা সেই নেতাদের দল করি। আমরা যদি দায়িত্ব পাই, তাহলে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ কায়েম করতে পারব।
তিনি বলেন, 'গত ১৫ বছরে দেশ থেকে যে অর্থ পাচার হয়েছে, সেই অর্থ যদি দেশেই ব্যবহার হতো, তাহলে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুরের চেয়েও উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারত। আমাদের সেই সম্পদ যদি থাকতো, তাহলে আমাদের সন্তানদের বিদেশে চাকরি করতে যেতে হতো না। বেকার সমস্যার সম্পূর্ণ দূর হয়ে যেত। বরং বিদেশ থেকেই লোকেরা আমার দেশে চাকরি করতে আসতো।'
জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে যাকাত বিষয়ক আইন চালু করবে বলেও জানান এটিএম আজহারুল। তিনি বলেন, 'জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে আমরা যাকাতি আইন চালু করব। আমরা দেখেছি প্রতি বছর ৫০ হাজার কোটি টাকা যাকাত আদায় হতে পারে। এ টাকা যদি আদায় করা যায়, তাহলে তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে যাকাত গ্রহণের কোনো লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না।'
তিনি বলেন, 'আমাদের বলা হয় দুটি কথা। একটি নারীদের নিয়ে যে তাদের স্বাধীনতা থাকবে না। এটা মিথ্যা কথা। আমরা যদি দায়িত্ব পাই তাহলে আমাদের কাছে সমগ্র বাংলাদেশের নারীরা সবচাইতে নিরাপদ থাকবে। আরেকটি কথা বলা হয়, আমরা ক্ষমতায় গেলে হিন্দুদের কচু কাটা করা হবে। আমি ব্যাখ্যা খুব একটা বেশি দেব না। আপনার একটু মনে করে দেখেন, যখন হাসিনা ক্ষমতায় ছিল তখন দুর্গাপূজার সময় মন্দির ভাঙা হতো। আর দোষ চাপানো হতো আমাদের ওপর।'
জামায়াত নেতা বলেন, 'দেশে দাঁড়িপাল্লার জোয়ার উঠেছে। এ জোয়ারে ভীত হয়ে আমাদের ওপর হামলা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যুবকেরা ভোটকেন্দ্র পাহারা দেবেন। যারা আক্রমণ করতে আসবে তাদের যেমন দুই হাত আছে, আমাদেরও দুই হাত আছে। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হলে, তা প্রতিহত করা হবে।'
এর আগে বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার আমিরাবাদ গ্রামে প্রয়াত জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার কবর জিয়ারত ও দুপুরে শহরের পশ্চিম খাবাসপুরে জামায়তের প্রয়াত সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদের কবর জিয়ারত করেন এটিএম আজহারুল ইসলাম।
