৫.৭ মাত্রার কম্পনটিই ছিল মূল ভূমিকম্প, বাকিগুলো আফটারশক: অধ্যাপক জিল্লুর রহমান
এখন পর্যন্ত অনুভূত ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পটিই ছিল মূল ভূমিকম্প পরবর্তীতে যেগুলো হচ্ছে, সেগুলো মূলত ওই ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের প্রতিক্রিয়া বা 'আফটারশক' বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান।
তিনি জানান, ৫.৭ মাত্রার মূল ভূমিকম্পটি স্বাধীনভাবে সংঘটিত হয়েছে অর্থাৎ এটি কোনো পূর্ববর্তী কম্পনের ওপর নির্ভরশীল নয়। ভূগর্ভের শক্তি সঞ্চিত ছিল তা ফল্ট বরাবর মুভমেন্টের ফলে এই শক্তিটা ভূমিকম্পের মাধ্যমে রিলিজ হয়েছে।
পরবর্তী কম্পনগুলোর কারণ ব্যাখ্যা করে অধ্যাপক জিল্লুর রহমান বলেন, 'এখন যে ছোট ভূমিকম্পগুলো হচ্ছে, সেগুলো ডিপ ভূমিকম্প, এগুলো হওয়ার কথা ছিল না। মূলত বড় ভূমিকম্প হওয়ার কারণেই এখন অ্যাডজাস্টমেন্টের জন্য এসব ছোট ভূমিকম্প হচ্ছে। কারণ, ভূ-পৃষ্ঠের এক জায়গা ওপরে উঠে গেছে, আরেক জায়গা নিচে নেমে গেছে এখন সেটাই আবার ভারসাম্যে ফিরছে'।
আফটারশক কতদিন স্থায়ী হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এই অ্যাডজাস্টমেন্ট নির্ভর করে মূল ভূমিকম্পের মাত্রার ওপর। ম্যাগনিচিউড বড় হলে অ্যাডজাস্টমেন্টেও এক বছরেরও বেশি সময় লেগে যেতে পারে। অর্থাৎ এক বছর পর্যন্ত আফটারশক হতে পারে। আমাদের যে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পটি হয়েছে এটি মাঝারি ধরনের'।
মাটির গঠনপ্রকৃতি তুলে ধরে তিনি বলেন, 'নরসিংদী এলাকাটা 'থিক সেডিমেন্টারি ডিপোজিটের' ওপর অবস্থিত যা খুব নরম মাটি। এখানে অ্যাডজাস্টমেন্ট হতে মাসখানেকের বেশি সময়ও লাগতে পারে। আবার এমনও হতে পারে এ ধরনের আফটারশক আর নাও হতে পারে'।
ভূ-পৃষ্ঠের পরিবর্তনের বিষয়ে অধ্যাপক জিল্লুর বলেন, ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ভূ-পৃষ্ঠে এত বড় ঝাঁকুনি লেগেছে যে প্রায় ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার এলাকায় বড় ফ্র্যাকচার বা ফাটল তৈরি হয়েছে। এই ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভূ-পৃষ্ঠ ফেটে কয়েক সেন্টিমিটার ওপর-নিচ হয়ে গেছে। ফলে বহু জায়গায় রিঅ্যাডজাস্টমেন্টের প্রয়োজন রয়েছে। এ কারণেই নরসিংদীর ভেতরেই এবং ওই ফল্টের আশেপাশে এই ভূমিকম্পগুলো সীমাবদ্ধ রয়েছে।
সবশেষে তিনি বলেন, 'এখনও আমরা গত কয়েকদিনের কম্পনগুলোকে আফটারশকই বলব কারণ এগুলোর কোনোটির মাত্রাই মূল ভূমিকম্পের চেয়ে বড় নয়। এর চেয়ে বড় হলে তখন সেটা আমাদের উদ্বেগের কারণ হবে'।
