জামায়াতসহ ৮ দল সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচন করবে: সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে 'সমঝোতার ভিত্তিতে' অংশগ্রহণের ইঙ্গিত দিয়েছে আন্দোলনে থাকা জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি দল। এ বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে এবং একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়তে ফ্যাসিবাদবিরোধী অন্যান্য দলের সঙ্গেও আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছে তারা। তবে পাঁচ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
পাঁচ দফা দাবিতে আজ বুধবার (১৯ নভেম্বর) আট দলের নতুন কর্মসূচি ঘোষণার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।
নির্বাচনে অংশগ্রহণের কৌশল সম্পর্কে হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, 'আমরা সবাই মিলে আন্দোলনও করছি এবং আমরা সমঝোতার ভিত্তিতে ইলেকশনে যাব, এরকম একটা আমাদের আলোচনা হয়েছে।' তিনি জানান, জোটের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকের পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত ও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে।
জোটের পরিধি আরও বাড়তে পারে এমন ইঙ্গিত দিয়ে জামায়াতের এই নেতা জানান, আট দলের বাইরেও ফ্যাসিবাদবিরোধী অন্য দলগুলোকে জোটে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আলোচনা চলছে। তিনি বলেন, 'ফ্যাসিবাদবিরোধী ইসলামী, গণতান্ত্রিক, দেশপ্রেমিক যত শক্তি আছে সবাইকে নিয়ে আমরা ইলেকশনে পার্টিসিপেট [অংশগ্রহণ] করতে চাই। এ দরজা আমাদের উন্মুক্ত আছে।'
'নীতিগতভাবে যারা ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে ছিলেন এবং দেশকে ভালোবাসেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং সংস্কারপন্থী হয়েছেন' তাদেরকেই স্বাগত জানানো হবে বলে জানান তিনি। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, 'যারা সংস্কারের বিরোধিতা করে... তাদের সাথে ঐক্য হওয়ার সুযোগ নাই।'
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি বাস্তবায়নের জন্য গণভোটের দাবি থেকে তারা সরেননি বলে জানান হামিদুর রহমান আযাদ। তিনি সরকারের প্রস্তাবিত 'হ্যাঁ-না ভোট'কে তাদের এক নম্বর দাবিরই অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, "হ্যাঁ না ভোট কিসের জন্য? জুলাই সনদের জন্য। তো আমাদের এক নম্বর দফা জুলাই সনদ।'
হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, দাবি আদায়ের আন্দোলন এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি—দুটোই একসঙ্গে চলবে। তিনি বলেন, 'নির্বাচনের প্রস্তুতি আর আন্দোলন দুটি একসাথে চলছে।' ফেব্রুয়ারিতে একটি সুষ্ঠু ও সময়োপযোগী নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই তারা মাঠে আছেন এবং সভা-সমাবেশের মতো কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
জামায়াতের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো হচ্ছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশের ওপর গণভোটসহ পাঁচ দাবিতে আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাত বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিকভাবে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে এই আটটি দল।
আট দলের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকের পর বুধবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন জামায়াতের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ।
