বিচারকদের নিরাপত্তাসহ ২ দাবি: না মানলে রোববার থেকে দেশজুড়ে কলম বিরতির হুঁশিয়ারি
বিচারকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ দুটি দাবি পূরণে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। এই সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে আগামী রোববার (১৬ নভেম্বর) থেকে দেশজুড়ে একযোগে কলম বিরতি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম ও মহাসচিব মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই আল্টিমেটাম ঘোষণা করা হয়।
অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দুটি প্রধান দাবি জানানো হয়েছে:
- সকল আদালত, বিচারকদের বাসস্থান ও যাতায়াতের সময় অবিলম্বে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োগ করে বিচারকদের কাজের পরিবেশ ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
- রাজশাহীর ঘটনায় বিচারকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অবহেলায় জড়িত এবং গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে আইনবহির্ভূতভাবে গণমাধ্যমের সামনে উপস্থাপনকারী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
মূলত রাজশাহীতে মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের ছেলে তাওসিফ রহমান সুমনকে (১৮) নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনার পর গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করে সংগঠনটি এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহারও গুরুতর আহত হয়েছেন।
অ্যাসোসিয়েশন জানায়, 'প্রকাশ্য দিবালোকে বিচারক পরিবারে এই লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুরো বিচার বিভাগ আজ স্তম্ভিত ও বাকরুদ্ধ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সারাদেশের বিচারকগণ ক্ষোভে ফুঁসছেন।'
বিবৃতিতে বিচারকদের নিরাপত্তা নিয়ে দীর্ঘদিনের অবহেলার অভিযোগ তোলা হয়েছে। এতে বলা হয়, 'দেশের প্রত্যেক আদালত, এজলাস, বিচারকদের বাসভবন ও গাড়িতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সুপ্রিম কোর্ট থেকে বারবার চিঠি দেওয়া হলেও সরকার কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি।'
অ্যাসোসিয়েশন আরও জানায়, 'জেলা পর্যায়ের সকল বিচারকের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি আবাসন ও পরিবহন ব্যবস্থা নেই। চৌকি আদালতে কর্মরত বিচারকদের অবস্থা আরও শোচনীয়। বিচারকদের বাধ্য হয়ে অরক্ষিত বাসায় ভাড়া থাকতে হয়, রিকশা-ভ্যানে করে এমনকি পায়ে হেঁটেও যাতায়াত করতে হয়। বিচার বিভাগের প্রতি এই উদাসীনতা ও চরম গাফিলতির কারণেই আজ বিচারক পরিবারে এ করুণ বিপর্যয় নেমে এসেছে। রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় বিচারকগণ সর্বদা নিয়োজিত থাকলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়নি। এই রক্তের দায় কোনোভাবেই এড়ানোর সুযোগ নেই।'
