সংসদ অধিবেশন শুরুর ১৮০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করতে হবে
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে বলা হয়েছে, গণভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট 'হ্যাঁ' সূচক হলে আগামী সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা একইসঙ্গে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে এবং এই আদেশ অনুসারে সংবিধান সংস্কার পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
পরিষদ এর প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ হতে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদ এবং গণভোটের ফলাফল অনুসারে সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন করবে এবং তা সম্পন্ন কবার পর পরিষদের কার্যক্রম সমাপ্ত হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন স্বাক্ষরিত এই আদেশ গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
তবে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে কী প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে, তা আদেশে স্পষ্ট করা হয়নি।
এর আগে ঐকমত্য কমিশন সুপারিশ করেছিল, পরিষদকে কাজ সম্পন্নের জন্য ২৭০ দিন (৯ মাস) সময় দেওয়া হোক।
কমিশন আরও প্রস্তাব করেছিল, যদি সেই সময়সীমার মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন না হয়, তাহলে জুলাই সনদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সংশোধনী প্রস্তাবগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে। তবে এই ধারাটি চূড়ান্ত গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
ধারণা করা হচ্ছে, সাংবিধানিক সংশোধনীগুলোর স্বয়ংক্রিয় অন্তর্ভুক্তির ধারণা নিয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের আপত্তির কারণে, এই অংশটি বাদ দেওয়া হয়েছে।
গেজেট অনুযায়ী, গণভোটে পাস হওয়া প্রস্তাবগুলো সংসদকে ১৮০ দিনের মধ্যে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
তবে যদি সংসদ তা করতে ব্যর্থ হয়, সেক্ষেত্রে ঐকমত্য কমিশন একটি বিকল্প প্রস্তাবও করেছিল। তা হলো: সংবিধান-সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো খসড়া বিল (সংবিধান সংশোধনী আইনের খসড়া) আকারে তৈরি করবে সরকার, যা দ্বিতীয় গণভোটে উপস্থাপন করা হবে। গণভোটে তা পাশ হলে সংবিধান সংস্কার পরিষদ মূলভাব ঠিক রেখে প্রস্তাবগুলো অনুমোদন করবে।
গত মাসে প্রস্তাবগুলো উপস্থাপনকালে ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ আশা প্রকাশ করেন যে পরবর্তী সংসদ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তার দায়িত্ব পালন করবে, যাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজন না হয়।
তিনি আরও জানান, প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংশোধন, সংযোজন ও বিয়োজন সম্পন্ন হওয়ার পর সংসদ তা অনুমোদন করবে এবং এরপর পরিষদের মেয়াদ শেষ হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, সংসদ সদস্যরা দুটি পৃথক শপথ নেবেন—একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদের সদস্য হিসেবে এবং আরেকটি সংসদ সদস্য হিসেবে। স্পিকার উভয় শপথ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ অক্টোবর জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫- স্বাক্ষরিত হয়। জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি)- কয়েকটি রাজনৈতিক দল জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান বর্জন করে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ঢাকা সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এই সনদে স্বাক্ষর করেন।
