স্বাস্থ্য খাতে ৩,৪২১ কোটি টাকার তিন প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
স্বাস্থ্য খাতে ৩,৪২১ কোটি টাকার তিনটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
সোমবার (১০ নভেম্বর) শেরে বাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা শেষে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব এস. এম. শাকিল আখতার অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলোর বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
স্বাস্থ্য খাতে অনুমোদিত তিন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে—স্বাস্থ্য খাতে অনুমোদিত তিন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ১,৬৬৩.৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে 'সমাপ্ত চতুর্থ সেক্টর কর্মসূচির অত্যাবশ্যকীয় পরিবার পরিকল্পনা, মা–শিশু ও প্রজনন স্বাস্থ্য সেবার অসমাপ্ত কার্যাবলী বাস্তবায়ন প্রকল্প'; ১,৫৪৬.৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে 'পিএফডি, এইচইএফ, আইএফএম, এইচআরডি এবং এসডব্লিউপিএমএম-এর অসমাপ্ত কার্যক্রম বাস্তবায়ন প্রকল্প' এবং ২১১.৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে 'স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর, নিপোর্ট ও নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের কার্যক্রম ব্যবস্থাপনায় সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্প'।
১৯৯৮ সাল থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় দেশের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও সেবা কার্যক্রমকে দক্ষ ও সাশ্রয়ীভাবে পরিচালনার জন্য ধারাবাহিকভাবে সেক্টর কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে চতুর্থ সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি) ২০২৪ সালের জুনে শেষ হয়েছে।
যদিও এই সেক্টর কর্মসূচিগুলোর পরিধি বিস্তৃত, বাস্তবায়নের সময় একই ধরনের কাজের পুনরাবৃত্তি ও ওভারল্যাপসহ নানা সীমাবদ্ধতা দেখা গেছে। এসব সমস্যার সমাধানে ভবিষ্যতে সরকার সেক্টর কর্মসূচি পদ্ধতি থেকে বের হয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও সেবা খাতকে স্থায়ী কাঠামোর আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে সেক্টরভিত্তিক প্রকল্পের পরিবর্তে প্রকল্পভিত্তিক উন্নয়ন পদ্ধতি গ্রহণ করা হচ্ছে।
এ কারণে স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি) থেকে ধীরে ধীরে বের হয়ে স্বাস্থ্য খাতের মূল কাঠামোর মধ্যে অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে চলমান ও জরুরি কার্যক্রম চালু রাখতে তিনটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
৭,১৫০.৯০ কোটি টাকার ১২ প্রকল্প অনুমোদন
একই সভায় স্বাস্থ্য খাতের তিন প্রকল্পসহ মোট ৭,১৫০.৯০ কোটি টাকার ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। সব প্রকল্পই সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে।
সভায় অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে—মানিকগঞ্জ ও সাতক্ষীরায় গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোণার হাওর এলাকায় ক্ষুদ্র সেচব্যবস্থা উন্নয়ন, গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুরে চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন প্রকল্প।
এছাড়া ঢাকাস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (তৃতীয় পর্যায়) প্রকল্প, ঢাকা সেনানিবাসের নির্ঝর এলাকায় অফিসারদের জন্য 'বি' টাইপ বাসস্থান নির্মাণ প্রকল্প, নড়াইল–কালিয়া মহাসড়কের ২১তম কিলোমিটারে নবগঙ্গা নদীর ওপর কালিয়া সেতু নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি এবং 'বিসিক শিল্প পার্ক, টাঙ্গাইল' প্রকল্প সংশোধনও অনুমোদন পেয়েছে।
তবে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের 'ভূমি নিবন্ধন ব্যবস্থাপনা অটোমেশন' প্রকল্পটি অনুমোদন না দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটির প্রস্তাবিত ব্যয় ছিল ৬৩২.৬৯ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রধান উপদেষ্টা ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে প্রকল্প প্রস্তাব পুনর্গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
