স্বাস্থ্যে দুর্নীতিকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন মিঠু: বিশেষজ্ঞরা
স্বাস্থ্য খাতের আলোচিত ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু দুনীতিকে 'শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন বলে একটি আলোচনায় মন্তব্য করেছেন বক্তারা। তারা আরও বলেন, বিগত সরকারের সময়ও মিঠুর কিছু হয়নি, এখনও তার কিছু হবে না।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর তোপখানায় বিএমএ ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত 'সর্বস্তরে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে চাই দুর্নীতিমুক্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা' শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। দুর্নীতিমুক্ত স্বাস্থ্য আন্দোলন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি বলেন, 'দুনীতি ও স্বাস্থ্য—এই দুটি শব্দের সঙ্গে মিঠুর নাম চলে আসে। মিঠু দুনীতিকে শৈল্পিক পর্যায়ে নিয়ে গেছেন।'
তিনি আরও বলেন, 'বিভিন্ন সময় নিউজ করতে গিয়ে দেখেছি কান্ট্রি অভ অরজিন লেখা হচ্ছে জার্মানি। কিন্তু মিঠু শিপমেন্টের কাগজে লিখেছেন করেছেন পোল্যান্ড, যে মেশিন দিয়েছেন সেটি চাইনিজ এবং পুরাতন। পুরাতন একটি মেশিন তিনি চায়না থেকে পোল্যান্ডে পাঠিয়েছেন, পোল্যান্ড থেকে শিপমেন্ট করে বাংলাদেশে পাঠিয়েছেন। যাতে বোঝা না যায় মেশিনটা কোন দেশ থেকে এল। তিনি এভাবে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন।'
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, 'আমরা সবাই তার বিরুদ্ধে লিখেছি, কিন্তু কী হয়েছে? কিছুই হয়নি। এই সরকার তাকে জেলে নিতে পেরেছে। বেরিয়েও গেছেন। আগের সরকারের হয়তো তাকে জেলে নেওয়ার ক্ষমতা ছিলো না।'
তিনি আরও বলেন, 'চীনা যন্ত্রপাতির ওপর জার্মানির স্টিকার দিয়ে সরবরাহ করাসহ কেনাকাটায় দুনীতি করেছেন তিনি। এভাবে প্রায় ২০ বছর তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন।'
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী। আলোচক ছিলেন লায়ন্স ক্লাব ইন্ট্যারন্যাশনালের প্রাক্তন ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর আশফাকুর রহমান, হ্যালক্রো গ্রুপ লিমিটেড সাবেক কনসালটেন্ট মশিউর রহমান।
লেলিন চৌধুরী বলেন, 'বাস্তবে স্বাস্থ্য খাতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়, তার অল্প অংশ মানুষের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়, বাকিটা হারিয়ে যায় অস্বচ্ছ প্রক্রিয়া ও দালাল-ঠিকাদার চক্রের লুটপাটে। স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি শুধু আর্থিক নয়, এটি সরাসরি মানুষের জীবনের ক্ষতি ডেকে আনে।'
