শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থানে প্রাথমিকের শিক্ষকেরা, স্বরাষ্ট্র ও গণশিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা এবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন। এর পাশাপাশি সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতেও চলছে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতি।
প্রাথমিকের শিক্ষকদের চারটি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত জোট 'প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ'-এর পক্ষ থেকে গতকাল এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এছাড়া আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জানিয়েছেন তারা।
দুপুর ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, শত শত শিক্ষক সেখানে অবস্থান নিয়েছেন। তারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে বসে ও দাঁড়িয়ে স্লোগানসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে নিজেদের দাবি তুলে ধরছেন।
শিক্ষক নেতারা জানান, শাহবাগে তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে এবং তিন দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে যে ৩টি প্রধান দাবি উত্থাপন করা হয়েছে, সেগুলো হলো: দশম গ্রেডে বেতন-ভাতা প্রদান; ১০ বছর ও ১৬ বছর চাকরি পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদান সংক্রান্ত জটিলতা ও সমস্যার স্থায়ী সমাধান এবং সহকারী শিক্ষকদের জন্য শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা প্রদান।
গতকাল থেকে শহিদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন প্রাথমিকের শিক্ষকেরা। গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শিক্ষকদের রাজধানীর শাহবাগ অভিমুখী পদযাত্রায় বাধা দেয় পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এর প্রতিবাদেই আজ নতুন কর্মসূচি দেয়া হয় আন্দোলনরত শিক্ষকদের পক্ষ থেকে।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম গতকাল শহীদ মিনারে কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে বলেন, 'শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ বর্বর হামলা চালিয়েছে। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি চলবে। একইসাথে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচিও চলবে।'
'প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ'-এর ব্যানারে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বিভিন্ন অংশসহ চারটি সংগঠন এ কর্মসূচি পরিচালনা করছে। সংগঠনগুলো হলো: বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম–শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন–লিপি) এবং সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ।
