পদত্যাগ করলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী ৬ ডিন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) রাকসু নেতৃবৃন্দ ও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে অবশেষে দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করেছেন আওয়ামীপন্থী ছয়জন ডিন। রোববার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপাচার্যের বাসভবনে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠক শেষে তারা লিখিতভাবে উপাচার্যকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
দীর্ঘ পৌনে চার ঘণ্টার বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ইফতিখারুল আলম মাসউদ জানান, ডিনরা মেয়াদের অতিরিক্ত সময়ে দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করেছেন এবং উপাচার্য বরাবর লিখিত দিয়েছেন।
দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশকারী ডিনরা হলেন- আইন অনুষদের আবু নাসের ওয়াহিদ, বিজ্ঞান অনুষদের নাসিমা আখতার, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের এ এস এম কামরুজ্জামান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের এস এম এক্রাম উল্যাহ, প্রকৌশল অনুষদের বিমল কুমার প্রামাণিক এবং ভূ-বিজ্ঞান অনুষদের এ এইচ এম সেলিম রেজা।
জানা যায়, গত ১৭ ডিসেম্বর এসব ডিনদের মেয়াদ শেষ হলেও একাডেমিক কাজের প্রয়োজনে প্রশাসন সম্প্রতি তাদের মেয়াদ বাড়িয়ে দেয়। জুলাই আন্দোলনে তাদের বিতর্কিত ভূমিকা এবং শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানান।
এর আগে রোববার দুপুর থেকে ক্যাম্পাসে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। ডিনদের পদত্যাগের দাবিতে দুপুরে প্রশাসন ভবনে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, প্রক্টর ও রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয় রাকসু প্রতিনিধি ও একদল শিক্ষার্থী। এ সময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও ছাত্রশিবির নেতাদের বাগবিতণ্ডাও হয়।
টানা অবরোধের পর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় ডিনদের অব্যাহতির আশ্বাস মিললে শিক্ষার্থীরা তালা খুলে দেন। সেই আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতেই সন্ধ্যায় উপাচার্যের বাসভবনে জরুরি বৈঠক বসে এবং দায়িত্ব থেকে ডিনরা সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।
রোববার সকালে রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার রাকসু ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে ডিনদের পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন। তিনি ফেসবুকে এক পোস্টে লেখেন, 'আজ মোটামুটি সব দপ্তরে আওয়ামীপন্থীদের দপ্তরগুলো তালাবদ্ধ। বিচার না হওয়া পর্যন্ত তালাবদ্ধ থাকুক। জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান করা শিক্ষকদের তালিকা করা হচ্ছে।'
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা 'আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না', 'আওয়ামী লীগের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান', 'ডাইরেক্ট অ্যাকশন' সহ নানা স্লোগান দেন। কর্মসূচিতে রাকসু নেতারা ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির ও ছাত্রপক্ষের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
