ফরিদপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ; ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, আহত ৩০
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে 'জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস'- উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। এসময় বেশ কিছু দোকান ভাঙচুর ও ১০/১৫টি মোটরসাইকেলে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর-১ আসনের বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে স্থানীয় দুই প্রার্থীর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা চলছিল বেশ কিছু দিন ধরে।
বিকেলে বোয়ালমারী উপজেলার ওয়াপদা মোড়ে সাবেক সাংসদ ও কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি খোন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর সমর্থকরা অবস্থান নেয় কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে।
এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এরপর দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উত্তেজিত নেতা-কর্মীরা এসময় সেখানে থাকা ১০/১৫টি মোটরসাইকেল আগুন ধরিয়ে দেয়।
এছাড়া, ওয়াবদা মোড়ে অবস্থিত হারুন কমপ্লেক্স ভবন ভাঙচুরসহ বেশ কিছু দোকানপাট ভাঙচুর করে সংঘর্ষকারীরা। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে সংঘর্ষ। এসময় উভয়পক্ষের অন্তত ২৫/৩০ জন আহত হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
খবর পেয়ে বোয়ালমারী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে গেলে বিক্ষুব্ধদের মুখে পড়ে ফিরে যায়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা করি। এসময় বিএনপি ঝুনু গ্রুপের সমর্থকরা অতর্কিতভাবে আমাদের মিছিলে হামলা চালায়। তারা ককটেল বিস্ফোরণসহ আমাদের নেতা-কর্মীদের মেরে আহত করে।'
তিনি বলেন, 'এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার নিন্দা জানাই আমরা।'
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় সাহা বলেন, 'ঝুনু গ্রুপের কর্মসূচি সকাল ১০টার সময় ঘোষণা দেওয়া ছিল। আমরা এ কারণেই বিকালে কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিলাম। তারা সে কর্মসূচি থেকে সরে এসে বিকেলে আমাদের মিছিলে হামলা চালায়। আমাদের নেতা-কর্মীদের মেরে আহত করে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
অন্যদিকে, উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু অভিযোগ করে বলেন, 'আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে উপজেলা বিএনপির মিছিল থেকে হামলা চালানো হয়। এ সময় আমাদের প্রায় ৩০টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আমাদের পার্টি অফিসেও ভাঙচুর চালায় তারা।'
তিনি আরও বলেন, 'এ সময় তারা আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।'
এ বিষয় নিয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, পরবর্তীতে এ বিষয়ে জানানো হবে।
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, 'বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এসময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তবে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।'
