অন্তর্বর্তী সরকার এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে, যা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে: ফখরুল
অন্তর্বর্তী সরকার এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, 'একটি রাজনৈতিক দল জোট বানিয়ে চাপ সৃষ্টি করছে যে নির্বাচনের আগেই গণভোট হতে হবে। আমরা বলেছি, গণভোট নির্বাচনের দিনই হতে হবে। দুটি ভোট করতে গেলে অপ্রয়োজনীয় খরচ হবে এবং মূল নির্বাচনের গুরুত্ব হারাবে। অথচ অন্তর্বর্তী সরকার এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।'
তিনি আরও বলেন, 'নির্বাচনের আগে যারা গণভোট চাচ্ছে, তারা এর মাধ্যমে নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে।'
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত র্যালিপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, 'খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হতে হবে এবং সেই নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশের মানুষ কিছুতেই তা মেনে নেবে না।'
তারেক রহমানকে 'আধুনিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা' আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, 'সংস্কারের জন্য ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন তারেক রহমান। সেই সংস্কারের কাজ এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শুরু করলে আমরা তাদের পূর্ণ সমর্থন জানাই। এক বছর ধরে তারা সংস্কারের সড়ক তৈরির কাজ করেছে। গত ১৭ অক্টোবর বিভিন্ন দলের মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে, যেগুলোতে আমরা স্বাক্ষর করেছি।'
তিনি অভিযোগ করে বলেন, 'হঠাৎ এক উপদেষ্টা সদস্য প্রেস কনফারেন্স করে জানালেন যে রাজনৈতিক দলগুলোকে সাত দিন সময় দেওয়া হবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। তাহলে এতদিন ধরে ঐকমত্য কমিশনে যে কাজ হলো, তাতে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত কোথায় গেল? অসংখ্য টাকা খরচ করে কাজটি হলো, কিন্তু কোনো সমস্যা সমাধান হলো না।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব এবং ইনশাআল্লাহ বিজয়ী হয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব।'
যুবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, 'যে ত্যাগ আপনারা স্বীকার করেছেন, আমাদের হাজারো নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন; তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সামনে এগিয়ে যান এবং বিজয় সুনিশ্চিত করুন।'
জামায়াতের ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, 'বিএনপি মাঠে নামলে আপনাদের কাউকে খুঁজেও পাওয়া যাবে না। ৭১ সালে যেমন জাতিকে বিভ্রান্ত করেছিলেন, এখনো তাই করছেন। সময় থাকতেই জাতির কাছে ক্ষমা চান।'
র্যালিতে বিভিন্ন ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, ট্রাক ও সাজানো গাড়ি নিয়ে নেতাকর্মীরা অংশ নেন। সমাবেশ চলাকালে নয়াপল্টন এলাকায় যান চলাচল বন্ধ থাকে। পুরো এলাকাজুড়ে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ।
ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে এ র্যালির আয়োজন করে বিএনপি। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বিকেল সোয়া ৪টায় নয়াপল্টন থেকে র্যালিটি শুরু হয়।
