সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনে ঐকমত্য কমিশন যে সুপারিশ করল
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আজ (২৮ অক্টোবর) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তাদের সুপারিশ জমা দিয়েছে, যেখানে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
কমিশন তার প্রস্তাবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন ও তার কার্যাবলি সম্পর্কিত বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেছে। যেমন,
কীভাবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন হবে?
কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, গণভোটে উপস্থাপিত প্রশ্নের উত্তরে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ইতিবাচক (হ্যাঁ সূচক) হলে, আসন্ন জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা একইসঙ্গে জাতীয় সংসদ সদস্য এবং সংবিধান সংস্কার পরিষদের সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
পরিষদের অধিবেশন আহ্বান, কোরাম, ভোটদান কীভাবে হবে?
সংসদ নির্বাচনের ফল ঘোষণার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে যে পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন আহ্বান করা হবে, সেই একই পদ্ধতিতে পরিষদের প্রথম অধিবেশন আহ্বান করা হবে।
পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ন্যূনতম ৬০ (ষাট) জন পরিষদ-সদস্যের উপস্থিতি প্রয়োজন হবে।
সদস্যদের শপথ কীভাবে হবে?
সুপারিশে বলা হয়েছে, 'এক্ষেত্রে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা একাদিক্রমে সংসদ ও সংস্কার পরিষদের জন্য আলাদা শপথ নিবেন এবং অনুরূপ শপথপত্রে বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর দান করিবেন।'
কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, 'এই আদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, পরিষদ ইহার অধিবেশন আহ্বান ও মুলতবি, সংবিধান সংস্কার বিষয়ক প্রস্তাব উত্থাপনের পদ্ধতি, উক্ত প্রস্তাব বিবেচনা ও গ্রহণ এবং অন্য সকল বিষয়ে কার্যপ্রণালী নির্ধারণ করিবে। জাতীয় সংসদ সচিবালয় পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করিবে।'
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের অক্টোবরে অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধান সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে ৬টি কমিশন গঠন করেছিলো।
এসব কমিশনের সুপারিশ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সরকারের কাছে দেয়ার প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়।
কমিশন সরকার কর্তৃক গঠিত বিভিন্ন কমিশনের সুপারিশমালার আলোকে ১৬৬টি সুপারিশ দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চেয়েছিলো এবং দলগুলো এ বিষয়ে তাদের লিখিত মতামত প্রেরণ করেছিলো। এরপর গত মার্চ মাস থেকে দলগুলোর সাথে আলোচনা শুরু করে কমিশন।
