১৯৫ কোটি টাকা পাচার: ক্যাসিনো সম্রাটের জামিন বাতিল, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
১৯৫ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে করা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ও ক্যাসিনো কিংপিন ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানের জামিন বাতিলের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (২৬ অক্টোবর) শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, এর আগে আসামিদের সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে আসামিরা হাজির না হওয়ায় তাদের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত।
তিনি আরও বলেন, আসামি সম্রাটের পক্ষে তার আইনজীবী ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ২০৫ ধারায় হাজিরা দিয়ে আসছেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে তার এই হাজিরা বাতিল চেয়ে আবেদন করা হয়। এ বিষয়ে সম্রাটের উপস্থিতিতে শুনানি জন্য রোববার তারিখ ধার্য করেন আদালত। তবে আসামিরা উপস্থিত না থাকায় তাদের জামিন বাতিল করেন।
এর আগে, গত ২৩ অক্টোবর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাদের আদালতে সশরীরে হাজিরের নির্দেশ দেন।
২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সিআইডির উপপরিদর্শক রাশেদুর রহমান বাদী হয়ে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, কাকরাইলের 'মেসার্স হিস মুভিজ' নামের একটি প্রতিষ্ঠানে বসে মতিঝিল, ফকিরাপুল, পল্টন, কাকরাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় 'অবৈধ কর্মকাণ্ড' চালাতেন সম্রাট। এভাবে তিনি ২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ৯ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে 'বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ' উপার্জন করেন। এসব অর্থের উৎস গোপন করার জন্য সহযোগী এনামুল হক আরমানের মাধ্যমে তিনি সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়ায় অর্থ পাচার করতেন, যার পরিমাণ আনুমানিক ১৯৫ কোটি টাকা।
সম্রাট ২০১১ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ৯ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে ৩৫ বার সিঙ্গাপুরে, তিনবার মালয়েশিয়ায়, দুইবার দুবাইয়ে ও একবার হংকংয়ে গেছেন। আর এনামুল হক আরমান ২০১১ সালের ১২ ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৮ মে পর্যন্ত সময়ে ২৩ বার সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করেছেন বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাকে নিয়ে কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ভেতর থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, পিস্তল ও বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীর চামড়া উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও বন্যপ্রাণীর চামড়া রাখার দায়ে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
