হাদি হত্যা: মূল সন্দেহভাজন ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দায় স্বীকার
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় মূল সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবী দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ঢাকার দুটি পৃথক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গতকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আসামিরা হলেন—ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু এবং বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা।
চার দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল রাত সোয়া ৬টার দিকে পুলিশ আসামিদের আদালতে হাজির করে। পরে তারা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দিনের আদালত মারিয়া আক্তার লিমার এবং অপর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম জুনাঈদের আদালত সাহেদা পারভীন সামিয়া ও ওয়াহিদ আহমেদ সিপুর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। পরে তিনজনকেই কারাগারে পাঠানো হয়।
ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের ডিসি মিয়া মোহাম্মদ আশিস বিন হাছান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে, গত ১৪ ডিসেম্বর সামিয়া ও সিপুকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এবং মারিয়াকে ঢাকা থেকে আটক করে পল্টন থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে দুই দফায় তাদের মোট ৯ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে শরিফ ওসমান হাদি রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম ইনকিলাব মঞ্চ গঠন করে মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর ২টা ২০ মিনিটে পল্টন মডেল থানাধীন বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় মোটরসাইকেলে থাকা দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে মাথা ও ডান কানের নিচে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি গুরুতর আহত হন।
পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং এরপর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের ১৪ ডিসেম্বর পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। পরে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়।
