ঋণখেলাপির তালিকা থেকে মান্নার নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ চেম্বার আদালতের, নির্বাচনে বাধা নেই
ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত। এর ফলে তার আর নির্বাচন করতে কোনো বাধা নেই।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে বিচারপতি মো. রেজাউল হকের চেম্বার আদালত এ আদেশ দেন। পাশাপাশি হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাম কাটানোর জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন মান্না। গত বুধবার হাইকোর্ট সেই আবেদন খারিজ করায় তার ভোটের পথ আটকে যায়।
সেই আদেশের বিরুদ্ধে মান্না আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে গিয়েছিলেন। সেইসঙ্গে ঋণ পুনঃতফসিল করে সিআইবির তালিকা থেকে নাম কাটানোর আবেদন করেছিলেন তার আইনজীবী।
সে আবেদন শুনে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক হাইকোর্টের আদেশ ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে দিয়েছেন। সেইসঙ্গে সিআইবির তালিকায় মান্নার নামও স্থগিত করা হয়েছে।
এর ফলে মান্নার নির্বাচন করতে কোনো বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
মান্নার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম, মামুন মাহবুব।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, 'ব্যাংক লোন রিশিডিউল হয়েছে। নির্বাচনে বাধা নেই।'
ইসলামী ব্যাংকের আইনজীবী এম আব্দুল কাইয়ুম বলেন, 'আজকে অনারেবল জাজ ইন চেম্বারে উনার পক্ষ থেকে ওনারা যে আবেদনটা করেছিল, সেখানে ওনারা এক দরখাস্ত দিয়েছিলেন, যাতে ওনার যে সিআইবিটা আছে ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো বাংলাদেশ ব্যাংকের, যেখানে খেলাপিদের তালিকা থাকে। সেই তালিকায় যারা থাকেন, আপনারা জানেন, তারা নির্বাচন করতে পারেন না। তো মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের অনারেবল জাজ ইন চেম্বার আজকে সেই সিআইবিটাকে স্টে করেছেন। আপাতত এই সিআইবিতে স্টে হয়ে যাওয়ার কারণে নির্বাচনে কোনো বাধা থাকার কথা না।'
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত ১০ ডিসেম্বর মান্নার প্রতিষ্ঠান আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের কাছে খেলাপি ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা আদায়ে নোটিস পাঠায় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের বগুড়া বড়গোলা শাখা। মান্না ও তার দুই অংশীদারের ঠিকানায় পাঠানো এই নোটিসে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ করতে বলা হয়।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরী। এ প্রতিষ্ঠানে ৫০ শতাংশ রয়েছে মান্নার, ২৫ শতাংশ ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরীর এবং বাকি ২৫ শতাংশ শাজাহান চৌধুরীর স্ত্রী ও পরিচালক ইসমত আরা লাইজুর।
ব্যাংকের নোটিশে বলা হয়, ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে ২২ কোটি টাকা বিনিয়োগ অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ করেনি। ফলে বকেয়া বেড়ে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকায় দাঁড়ায়।
