ঘষামাজায় ৪০ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি: চসিকের ২ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত, তিনজনকে অব্যাহতি
দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৪০ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির উদ্দেশ্যে 'ফিল্ডবুক' ঘষামাজা করার অভিযোগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) দুই কর কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে এবং তিন হিসাব সহকারীকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) পৃথক চারটি অফিস আদেশের মাধ্যমে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেন।
এদিকে অনিয়মের তদন্তের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) চসিক কার্যালয়ে অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি দল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের সহকারী পরিচালক সায়েদ আলম বলেন, 'আমরা এখনো অভিযানে আছি, তাই এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারছি না।'
বরখাস্তদের মধ্যে রয়েছেন রাজস্ব বিভাগের কর কর্মকর্তা নুরুল আলম এবং উপকর কর্মকর্তা জয় প্রকাশ সেন। হিসাব সহকারী মঞ্জুর মোর্শেদ, রূপসী রাণী দে ও আহসান উল্লাহকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
তদন্তে দেখা গেছে, নগরীর দুটি প্রতিষ্ঠান—ইছহাক ব্রাদার্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও ইনকনট্রেড লিমিটেডের বার্ষিক হোল্ডিং মূল্যায়ন ইচ্ছাকৃতভাবে কম দেখানো হয়েছে। 'ফিল্ডবুক'-এ ২৬ কোটি ও ২৫ কোটির স্থলে যথাক্রমে ৬ কোটি ও ৫ কোটি টাকা লেখা হয়, যা পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। এতে চসিকের প্রায় ৪০ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়।
অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মেয়র এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেন। আদেশে বলা হয়, প্রতারণা ও বার্ষিক মূল্যায়নে কারচুপির প্রাথমিক প্রমাণ মেলায় ২০১৯ সালের চসিক চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
আদেশে আরও উল্লেখ করা হয়, বরখাস্তকালীন সময়ে তারা বিধি মোতাবেক খোরাকি ভাতা পাবেন।
মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, 'করপোরেশনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এবং দুর্নীতি বা অনিয়মে কোনো শিথিলতা না দিতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছি। কেউ অনিয়ম করলে ছাড় পাবে না।'
এছাড়া চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সংশ্লিষ্ট দুটি প্রতিষ্ঠানের হোল্ডিংয়ের প্রকৃত মূল্যায়ন ধরে পুনরায় আপিল রিভিউ বোর্ডে শুনানি নিয়ে সংশোধিত মূল্যায়ন চূড়ান্ত করতে।
