এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৫৮.৮৩%

২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে পাস করেছেন মোট ৭ লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ জন শিক্ষার্থী।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ। গত বছর ১১ টি বোর্ডে গড় পাসের হার ছিলো ৭৭.৭৮ শতাংশ। এবার পাশের হার কমেছে ১৮.৯৫ শতাংশ
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠান এবং অনলাইনে একযোগে ফল প্রকাশিত হয়েছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড মিলনায়তনে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. খন্দোকার এহসানুল কবির আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করেন।
প্রকাশিত ফলাফল অনুসারে, এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন। আর ২০২৪ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন এক লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন শিক্ষার্থী। সে হিসেবে এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৭৬ হাজার ৮১৪ জন।

ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৬৪.৬২ শতাংশ, রাজশাহী বোর্ডে পাসের হার ৫৯.৪০ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে পাশের হার ৪৮.৮৬ শতাংশ, যশোর বোর্ডে পাশের হার ৫০.২০ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে পাশের হার ৫২.৫৭ শতাংশ, বরিশাল বোর্ডে ৬২.৫৭ শতাংশ, সিলেট বোর্ডে ৫১.৮৬ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ডে পাশের হার ৫৮.৪৯ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বোর্ডে পাশের হার ৫১.৫৪ শতাংশ।
এছাড়া, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে পাশের হার ৭৫.৬১ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডে পাশের হার ৬২.৬৭ শতাংশ।
বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে আছেন ছাত্রীরা। এ বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ডে ছাত্রীদের পাসের হার ৬২.৯৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩৭ হাজার হাজার ৪৪ জন ছাত্রী। আর ছাত্রদের পাসের হার ৫৪.৬০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩২ হাজার ৫৩ জন ছাত্র।
মোট ২০২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষার্থী পাশ করেননি। ৩৪৫ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাশ করেছেন।
এ বছর পাসের হার কমে যাওয়া প্রসঙ্গে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি খন্দকার এহসানুল কবির বলেন, 'উত্তরপত্র মূল্যায়নের নিয়ম অনুসারে খাতা দেখা হয়েছে। অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইংরেজি, গণিত, আইসিটি বিষয়ে ফেইল করেছেন। এবার অতিরিক্ত সময় নিয়ে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেছেন পরীক্ষকরা। এটাই প্রকৃত ফলাফল।'
তিনি বলেন, 'এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী ফেইল করেছে, এটা অনাকাঙ্ক্ষিত। এ পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখলাম, গলদ আছে ।'
এহসানুল কবির আরও বলেন, 'এমন বাস্তবতা আমাদের সামনে এসে হাজির হয়েছে। আমরা সেটা ফ্যাব্রিকেট (বানানো) করিনি। এ ফলাফল খারাপের পাশাপাশি রিয়ালও (বাস্তব) বলা যায়। শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার ব্যাপারে বিমুখ, টেবিল থেকে দূরে ছিলো বলে আমরা ধারণা করছি। সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনের পরবর্তী দায়িত্ব এর কারণ অনুসন্ধান করা।'
গত ২৬ জুন থেকে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেয় ১২ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬১ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ১১ হাজার ৪৪৬ জন এবং ছাত্রী ৬ লাখ ২৪ হাজার ২১৫ জন। দেশের ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।