খাগড়াছড়িতে সহিংসতার ঘটনায় আইন ও সালিশ কেন্দ্রের উদ্বেগ, সুষ্ঠু তদন্তের দাবি

খাগড়াছড়ি জেলায় সহিংস ঘটনায় তিনজন নিহত, বেশ কয়েকজন আহত এবং সাধারণ মানুষের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে, যাতে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রমাণভিত্তিক ব্যবস্থা নেওয়া যায় এবং ধর্ষণের শিকার কিশোরী ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, 'গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, মারমা সম্প্রদায়ের এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ন্যায়বিচারের দাবিতে স্থানীয় তরুণেরা কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ, অবরোধ ও হরতাল পালন করছিল। তবে এসব কর্মসূচির সময় পরিস্থিতি উত্তেজনাকর হয়ে ওঠে। নিয়ন্ত্রণে আনতে নেওয়া পদক্ষেপ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে এবং শেষ পর্যন্ত প্রাণঘাতী সংঘর্ষে রূপ নেয়।'
এতে আরও বলা হয়, 'এ ঘটনায় যদি কোনোভাবে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ হয়ে থাকে, তবে সরকারকে তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। সংগঠনটি মনে করছে, পার্বত্য এলাকায় প্রায়ই উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে এবং এর ফলে জানমাল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অতীতে এমন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়া এবং অন্তর্নিহিত কারণ নিরূপণ না করায় এ ধরনের সহিংসতা বারবার ঘটছে।'
সংস্থাটি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, 'বাংলাদেশ একটি বহুজাতি ও বহু সংস্কৃতির দেশ। এই বৈচিত্র্য বিভেদের নয়, শক্তির প্রতীক। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা কেবল পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্য নয়, বরং জাতীয় ঐক্য ও দেশের ভাবমূর্তির সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সহিংসতা, ভয় ও উসকানি কখনোই সমাধান নয়; এগুলো কেবল অবিশ্বাস ও অস্থিতিশীলতা বাড়ায় এবং রাষ্ট্রের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করে। নাগরিক অধিকার সবার জন্য সমান—কারও প্রতি বৈষম্য, অবিচার বা নিরাপত্তাহীনতা মানেই রাষ্ট্রের ক্ষতি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অবিলম্বে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করে ঘটনার প্রকৃত কারণ ও দায়ীদের চিহ্নিত করতে হবে। ধর্ষণের শিকার কিশোরীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসনও জরুরি।'
এতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রের দায়িত্ব নাগরিকদের জীবন, সম্পদ ও মর্যাদা রক্ষা করা। এ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে এর পরিণতি গোটা সমাজকেই বহন করতে হবে।