আমার যাত্রা এখানেই শেষ নয়, আপনাদের কখনো ছেড়ে যাব না: আবিদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান জানিয়েছেন, নির্বাচনে নিজের ইশতেহারে যা বলেছিলেন, তা পূরণ করার চেষ্টা করবেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, তার যাত্রা এখানেই শেষ হয়নি। নিজের সীমাবদ্ধতার স্বীকারোক্তির পাশাপাশি ছাত্ররাজনীতির নতুন সূচনা তাদের হাতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
গত মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম শিবিরের প্রার্থী মো. আবু সাদিক কায়েমের কাছে হেরে যান। নির্বাচনের রাতে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি ফলাফলকে 'কারচুপি' এবং নির্বাচনকে 'প্রহসন' হিসেবে উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করেন।
বুধবার দুপুরের পর আবিদুল ইসলাম লিখেছেন, 'ক্ষুদ্র জীবনে আমি এত দূর আসব, কখনো ভাবিনি। নির্বাচনের আগের রাতে খালেদ মুহিউদ্দিন ভাই আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ৫ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চাই? আমি কোনো সদুত্তর দিতে পারিনি। একের পর এক আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যে নিজেকে রাজপথে সঁপে দিয়েছি। সেই পথ আজ আমাকে এত দূর নিয়ে এসেছে। ইটস ওকে। এই নির্বাচনে আমার দিনটি শুরু হয় মিডিয়ার অপপ্রচার দিয়ে। দুপুর থেকেই ভোটে বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক সমস্যা খুঁজে পেয়েছি, সারাটা দিন এ নিয়েই কথা বলেছি। আশা করি প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধান ও যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত আসবে।'
তিনি আরও লিখেছেন, 'মানুষ হিসাবে আমরা কেউ পরিপূর্ণ নই। আমি জানি, আপনাদের জন্য যথেষ্ট কাজ করতে পারিনি। সত্যি বলতে, জীবন আমাকে সেই সুযোগটুকুও দেয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী ভাই-বোনদের ভোট দিতে আসার জন্য ধন্যবাদ। মাত্র ২০ দিনের ক্যাম্পেইনে চেষ্টা করেছি প্রতিটি ছাত্রের কাছে পৌঁছাতে। অনেকটাই পৌঁছেছি, কিন্তু সবাইকে হয়তো স্পর্শ করতে পারিনি। তবে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আমার যাত্রা এখানেই শেষ নয়; আমার যাত্রা আরও দীর্ঘ।'
নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের একজন ছাত্রনেতা হিসেবে উল্লেখ করে আবিদুল ইসলাম বলেছেন, 'কথা দিচ্ছি, নির্বাচনী ইশতেহারে যা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলাম, তা একজন ছাত্রনেতা হিসেবেই প্রশাসনের কাছ থেকে আদায় করার জন্য যা যা করা দরকার, তা করব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতির নতুন সূচনা আমাদের হাত ধরেই হবে। আমরা অতন্দ্র প্রহরী হয়ে রাজপথ পাহারা দেব, নিজের সর্বস্ব দিয়ে সমগ্র বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনব। ইনশা আল্লাহ, এর প্রতিফলন পরবর্তী ডাকসু নির্বাচনে দেখতে পাবেন। আমি আপনাদের কখনো ছেড়ে যাব না।'
পোস্টটি আবিদুল ইসলাম মার্কিন নাগরিক মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের উক্তি দিয়ে শেষ করেন, 'We must accept finite disappointment, but never lose infinite hope.'
উল্লেখ্য, ডাকসুর শীর্ষ তিন পদ- সহসভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস)- শীর্ষ এই তিন পদেই জিতেছে শিবিরের প্যানেল 'ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট'। ভিপি পদে ১৪,০৪২ ভোটে জিতেছেন শিবিরের মো. আবু সাদিক কায়েম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫,৭০৮ ভোট।